“যেখানে দ্বিপাক্ষিক সিরিজ না হয়, সেখানে এশিয়া কাপ কেন?” — আজহারউদ্দিন

শেষ পর্যন্ত কাটল শঙ্কার মেঘ। বেঁকে বসা ভারতও রাজি হয়েছে, পাকিস্তান দিয়েছে সম্মতি। নিরপেক্ষ ভেন্যুতে আয়োজন হচ্ছে এশিয়া কাপ ২০২৫, আর তারই সঙ্গে নতুন করে বিতর্কে জড়িয়েছে ভারতের ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই)।
পেহেলগাঁওয়ে হামলার পর ভারত-পাকিস্তানের রাজনৈতিক বৈরিতা আরও তীব্র হয়ে ওঠে। এমন বাস্তবতায় অনেকেই আশঙ্কা করছিলেন, এবারের এশিয়া কাপ হয়তো বাতিলই হয়ে যাবে।
কিন্তু শেষ পর্যন্ত রাজনৈতিক চাপের মধ্যেই নিরপেক্ষ ভেন্যুতে আয়োজন চূড়ান্ত হয়েছে। যদিও বিষয়টি ভালোভাবে নেয়নি ভারতের ক্রীড়াঙ্গনের অনেকেই। বিসিসিআইয়ের এই অবস্থানকে দ্বিচারিতা হিসেবে দেখছেন অনেকে।
ভারতের সাবেক অধিনায়ক মোহাম্মদ আজহারউদ্দিন বিসিসিআইয়ের সমালোচনায় বলেন, “আমি সব সময়ই বলি—হলে সব জায়গাতেই হওয়া উচিত, আর না হলে কোথাও না। যদি দ্বিপাক্ষিক সিরিজ খেলা না হয়, তাহলে আন্তর্জাতিক আসরেও খেলা উচিত নয়। এটাই আমার বিশ্বাস। কিন্তু সরকার ও বোর্ড যা চায়, সেটাই ঘটে।”
আজহারের মতে, কূটনৈতিক অবস্থান অনুযায়ী যখন ভারত পাকিস্তানের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সিরিজে না খেলার নীতিতে আছে, তখন আন্তর্জাতিক আসরেও এমন নমনীয়তা বোর্ডের অবস্থানকে প্রশ্নবিদ্ধ করে।
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সময় আইসিসির মধ্যস্থতায় সমঝোতা হয়—২০২৭ সাল পর্যন্ত কোনো টুর্নামেন্টে ভারত পাকিস্তানে যাবে না, পাকিস্তানও ভারতে খেলবে না।
সে ধারা অনুসারেই এশিয়া কাপ থেকে ভারত সরে দাঁড়ানোর পথে ছিল। কিন্তু শেষ সময়ে সিদ্ধান্ত পাল্টে নেয় বিসিসিআই। নিরপেক্ষ ভেন্যুতে খেলতে রাজি হয় ভারত, যা নীতিগতভাবে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।
নতুন সূচি অনুযায়ী, ১৪ সেপ্টেম্বর গ্রুপ পর্বে প্রথমবার মুখোমুখি হবে ভারত-পাকিস্তান। এরপর যদি উভয় দল সুপার ফোরে ওঠে, সেখানে হবে দ্বিতীয় লড়াই। এবং উভয় দল যদি ফাইনালে পৌঁছে, তাহলে মোট তিনবার দেখা হতে পারে দুই বৈরী দেশের।
দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক না থাকা সত্ত্বেও আন্তর্জাতিক মঞ্চে মুখোমুখি লড়াই—এই দ্বন্দ্বপূর্ণ বাস্তবতা ঘিরে বিতর্ক অব্যাহত। বিসিসিআইয়ের অবস্থান কূটনৈতিকভাবে নমনীয় হলেও, ক্রীড়া ও নৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে প্রশ্নবিদ্ধ বলেই মনে করছেন অনেক সাবেক ক্রিকেটার ও বিশ্লেষক।