এসএসসি পরীক্ষায় নকলের অভিযোগে ১২ পরীক্ষার্থী বহিষ্কার, দায়িত্ব হারালেন ১৩ শিক্ষক

এসএসসি পরীক্ষার দ্বিতীয় দিনে ঝালকাঠি জেলায় নকলসহ ধরা পড়ায় ১২ জন পরীক্ষার্থীকে বহিষ্কার এবং এক কেন্দ্রসচিবসহ ১৩ জন শিক্ষককে পরীক্ষার দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

জানা গেছে, মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) গণিত পরীক্ষার সময় জেলার বিভিন্ন কেন্দ্রে এ অনিয়মের ঘটনা ঘটে। ঝালকাঠির অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) শাকিলা রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বনের অভিযোগে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

নলছিটি, কাঁঠালিয়া ও রাজাপুর উপজেলায় অনুষ্ঠিত পরীক্ষাকেন্দ্রগুলিতে অসদুপায় অবলম্বনের অভিযোগ এলে বেশ কয়েকটি কেন্দ্রে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। নলছিটি উপজেলার ভরতকাঠী জি আর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে বই দেখে পরীক্ষা দেওয়ার সময় ৪ পরীক্ষার্থী হাতেনাতে ধরা পড়েন। ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. নজরুল ইসলাম। তিনি ওই চার শিক্ষার্থীকে পরবর্তী সব পরীক্ষায় বহিষ্কার এবং কেন্দ্রসচিবসহ আট শিক্ষককে পরীক্ষার দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেন। 

নলছিটি বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ২ পরীক্ষার্থী, কাঁঠালিয়া উপজেলায় কাঁঠালিয়া সদর ফাজিল মাদ্রাসায় ১ পরীক্ষার্থী ও ২ শিক্ষক, আমুয়া চাঁদমিয়া ফাজিল মাদ্রাসায় ৩ পরীক্ষার্থী ও ৩ শিক্ষক এবং রাজাপুর উপজেলায় রাজাপুর পাইলট মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ২ পরীক্ষার্থীকে পরীক্ষার নিয়ম লঙ্ঘনের অভিযোগে বহিষ্কার করা হয়েছে।

কেন্দ্র সচিব ফিরোজ আলম জানান, অভিযুক্ত শিক্ষকরা হলেন—কামরুল হুদা, তাসরিন সুলতানা, হুমায়ুন কবির, হাবিবুর রহমান, ইসরাত সুলতানা, মহিউদ্দিন সরদার, শহিদুল ইসলাম ও ইসলামুল হক। বিষয়টি বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রককেও লিখিতভাবে জানানো হয়েছে।

এছাড়াও, নলছিটি বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ২ পরীক্ষার্থী, কাঠালিয়া সদর ফাজিল মাদ্রাসায় ১ পরীক্ষার্থী ও ২ শিক্ষক, আমুয়া চাঁদমিয়া ফাজিল মাদ্রাসায় ৩ পরীক্ষার্থী ও ৩ শিক্ষক এবং রাজাপুর উপজেলায় ভোকেশনাল পরীক্ষার সময় দুই পরীক্ষার্থীকে নকলসহ হাতেনাতে ধরেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা। ফলে তাদেরও বহিষ্কার করা হয়। বর্তমানে জেলায় মোট ৩১টি কেন্দ্রে ১১ হাজার ৪৬ পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করার কথা থাকলেও দ্বিতীয় দিনে ১৬১ পরীক্ষার্থী অনুপস্থিত থাকার ঘটনাও উঠে এসেছে।

নলছিটি ইউএনও মো. নজরুল ইসলাম বলেন, “শিক্ষার মান রক্ষা এবং সুষ্ঠু পরীক্ষা নিশ্চিত করতে উপজেলা প্রশাসন কঠোর অবস্থানে রয়েছে। কোনো ধরনের অনিয়ম বরদাস্ত করা হবে না।”

ঝালকাঠির অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) শাকিলা রহমান পত্রিকাকে নিশ্চিত করে জানান, “প্রতিটি পরীক্ষাকেন্দ্রে কঠোর নজরদারি ও সচ্ছতা নিশ্চিত করার প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে, পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন করলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”