পিআর বিতর্কে সংলাপে উত্তেজনা, ‘সরি’ বললেন হুদা

ভোটের অনুপাতে (পিআর) উচ্চকক্ষের গঠন আলোচনায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সংলাপে উত্তেজনা ছড়ায়। সংলাপে এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক জাবেদ রাসিনের উদ্দেশ্যে জাতীয় দলের চেয়ারম্যান ও ১২ দলীয় জোটের সমন্বয়ক সৈয়দ এহসানুল হুদা কটাক্ষ করে বলেন, ‘২০২৩ সালের আগে কোথায় ছিলেন।’
বাদানুবাদের পর হুদা ‘সরি’ বলে বক্তব্য প্রত্যাহার করেন। আজ বৃহস্পতিবার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দ্বিতীয় ধাপের ২৩তম দিনের সংলাপে দুপুর ১টা ৫০ মিনিটের পরে পিআর নিয়ে বিএনপির অবস্থান ব্যাখ্যা করে দলটির স্থায়ী কমিটির সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, সংবিধান সংশোধনের ক্ষমতা উচ্চকক্ষের হাতে দিতে চান না। উচ্চকক্ষের প্রতিনিধিদের অনির্বাচিত অ্যাখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, পৃথিবীর কোন দেশেই অনির্বাচিত ব্যক্তিদের হাতে সংবিধান সংশোধনের ক্ষমতা থাকে না।
তারপর বক্তব্য শেষ করার পর, এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক জাভেদ রাসিন বলেন, ভোটের সংখ্যানুপাতিকের ভিত্তিতে উচ্চকক্ষ গঠিত হলে, তা জনগণের প্রতিনিধিত্বের প্রতিফলন হয়।
তখন সালাহউদ্দিন ব্যাখ্যা দেন। এ সময় এহসানুল হুদা মাইক ছাড়াই জাভেদ রাসিনকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘২০২৩ সালে যখন আন্দোলন হচ্ছিল; তখন আপনারা কোথায় ছিলেন।’ জাবেদ রাসিন এর প্রতিবাদ করেন।
দু’জনই মাইক ছাড়া পাল্টাপাল্টি বক্তব্য দেন।
তখন কমিশনের সহ-সভাপতি আলী রীয়াজ বলেন, ‘হুদা ভাই, এর আগেও আপনারা একজনের বক্তব্য নিয়ে আপত্তি জানিয়েছেন। তখন আমরা থামিয়েছিলাম। এখানে আমরা কে? কেন এসেছি, সে প্রশ্ন তুললে বিপজ্জনক পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে। কারণ, আজকে যদি সে প্রশ্ন করেন, তাহলে রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে, আমাকেও সে প্রশ্ন করতে পারেন। আমরা সে আলোচনায় যাচ্ছি না।
তারপর এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন বলেন, ‘তিনি (হুদা) এই কথা বলতেই পারেন না৷’ এ সময় সালাহউদ্দিন তার পিঠ চাপড়ে থামতে অনুরোধ করেন।
আখতার তখন বলতে থাকেন, ‘আমরা বাচ্চাকাল থেকে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করে আসছি।’
তখন আলী রীয়াজ বলেন, কারও অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন করার দরকার নেই৷ এর জবাবে আখতার বলেন, ‘গায়ের জোরে এসব প্রশ্ন করলে তো আমরা মানব না।’
আলী রীয়াজ তখন বলেন, আমি তো হস্তক্ষেপ করলাম। আখতার জবাবে বলেন, সবাইকে নিয়ে আমরা গণঅভ্যুত্থান করেছি৷ উনার ক্ষমা চাওয়া উচিত।
এ সময় সালাহউদ্দিনকে বলতে শোনা যায়, ‘আচ্ছা হুদা ভাই, আপনি সরি বলেন।’
এ সময় গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জেনায়েদ সাকী কথা বলতে উঠে দাঁড়ালে, আলী রীয়াজ তাকে অনুরোধ করে বসিয়ে দেন। সালাহউদ্দিন তখন হুদাকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘কেউ যদি মনে কষ্ট পেয়ে থাকেন, তার জন্য সরি বলেন।’
তখন এহসানুল হুদা মাইক নিয়ে বলেন, ‘আমি বলতে চেয়েছিলাম, ২০২৩ সালে আমরা উচ্চকক্ষের প্রস্তাব দিয়েছিলাম, তখন পিআর কোথায় ছিল? তারপরও কেউ যদি আঘাত পেয়ে থাকে, আমি দুঃখিত।’
এরপরই আলী রীয়াজ মধ্যাহ্নভোজের বিরতির ঘোষণা করেন। বিরতির সময়ে সম্মেলন কক্ষে হুদাকে আবার আখতারের কাছে তার বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিয়ে তার সঙ্গে কোলাকুলি করতে দেখা যায়। পরে আখতার হুদাকে জাভেদ রাসিনের সঙ্গে কোলাকুলি করিয়ে দেন।