সরকারি গুদামে মজুত পর্যাপ্ত চাল, তবু দাম বাড়াচ্ছে মিলাররা

সরকারি গুদামে খাদ্যশস্যের পর্যাপ্ত মজুত থাকা সত্ত্বেও মিলারদের দাদন বাণিজ্যের কারণে চালের বাজারে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। বোরো মৌসুমে কৃষকের মাঠ থেকে মনপ্রতি ১১০০-১২০০ টাকায় ধান কিনে গুদামজাত করেছে মিলাররা। পরে কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে নিজেরাই দাম বাড়াচ্ছে। এর প্রভাবে পাইকারি ও খুচরা বাজারে চালের দাম হু হু করে বেড়ে যাচ্ছে।
খুচরা বাজারে এক কেজি মোটা চাল কিনতে এখন ৬০ টাকা খরচ করতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। সরু চালের দাম কেজিপ্রতি ৯০ টাকা ছুঁয়েছে। অথচ সরকারি হিসাবে ১৩ আগস্ট পর্যন্ত গুদামে মজুত আছে ২২ লাখ ৮ হাজার ৯২৯ টন খাদ্যশস্য। এর মধ্যে চালই রয়েছে প্রায় ২০ লাখ টন। ফলে সংকটের কোনো কারণ নেই।
নওগাঁ, দিনাজপুর ও রাজধানীর কাওরানবাজার, বাদামতলী, মালিবাগ কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে—
১. ৫০ কেজির মিনিকেট বস্তা ৩৫০০ টাকা থেকে বেড়ে ৩৯০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
২. ২৫ কেজির নাজিরশাইল বস্তা ১৯৫০ টাকা থেকে বেড়ে ২১৫০ টাকায় উঠেছে।
৩. ৫০ কেজির বিআর ২৮ চাল ২৭০০ টাকা থেকে বেড়ে ২৯৫০ টাকা হয়েছে।
৪. স্বর্ণা জাতের মোটা চাল ২৫৫০ টাকা থেকে বেড়ে ২৭৫০ টাকা হয়েছে।
খুচরা বাজারেও প্রতি কেজি মিনিকেট ৮৫-৮৭ টাকা, নাজিরশাইল ৯০ টাকা, বিআর ২৮ ও পাইজাম ৬৫ টাকা, স্বর্ণা ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তিন মাস আগেও এসব চাল ৫-৭ টাকা কম দামে পাওয়া যেত।
কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) ভাইস প্রেসিডেন্ট এসএম নাজের হোসাইন বলেন, “বোরো মৌসুমে চালের দাম কখনোই বাড়ার কথা নয়। নিম্ন আয়ের মানুষ সবচেয়ে বেশি কষ্টে আছে। দাম নিয়ন্ত্রণে তদারকি জোরদার করতে হবে।”
পাইকারি ব্যবসায়ী ও খুচরা বিক্রেতারাও দায় চাপাচ্ছেন মিলারদের ওপর। তারা বলছেন, মিলাররা মাঠ থেকেই ধান কিনে কৃত্রিম সংকট তৈরি করছে। ফলে পাইকারি ও খুচরা—দুই পর্যায়েই বাড়তি দামে চাল কিনতে হচ্ছে ক্রেতাদের।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বাজারে নিয়মিত তদারকি চলছে এবং অবৈধভাবে দাম বাড়ানোর প্রমাণ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে ভোক্তাদের অভিযোগ, কার্যকর তদারকি না থাকায় মিলাররা নির্বিঘ্নে বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে।