সিলেটের ভোলাগঞ্জে সাদা পাথর লুট: পর্যটন স্পট মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত!

সিলেটের ভোলাগঞ্জ উপজেলার সাদা পাথর নামক জনপ্রিয় পর্যটন স্পটে অবৈধভাবে পাথর উত্তোলনের কারণে প্রায় ৭৫ শতাংশ পাথর চলে গেছে। স্থানীয় সাংবাদিক মাহবুবুর রহমান রিপন জানান, শুধুমাত্র বিজিবি ক্যাম্প সংলগ্ন এলাকায় ২৫ শতাংশ পাথরই বাকি রয়েছে।
প্রাকৃতিকভাবে পাহাড়ি ঢলের তোড়ে ধলাই নদীর উৎসমুখে সাদা পাথরের বিশাল স্তুপ তৈরি হওয়ায় এটি গত কয়েক বছরে পর্যটকদের আকর্ষণ কেন্দ্র হয়ে উঠেছিল। স্থানীয়রা ও পরিবেশবাদীরা প্রশাসনের কার্যকর অভিযান না থাকাকে এ লুটের কারণ হিসেবে দেখেছেন।
সিলেটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদ জানিয়েছেন, প্রশাসনের পদক্ষেপ চলমান রয়েছে। মোবাইল কোর্ট ও টাস্কফোর্স অভিযান, নিয়মিত মামলা এবং সভার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান চেষ্টার কথাও তিনি উল্লেখ করেন। তবে তারপরও পাথর লুট বন্ধ হচ্ছে না, যার কারণে নতুন পরিকল্পনা ও সমন্বয় সভার আয়োজন করা হয়েছে।
পরিবেশবিদ ইকবাল হাবিব জানিয়েছেন, প্রাকৃতিকভাবে তৈরি এই পাথরের গুরুত্ব অপরিসীম। পাথরগুলো নদীর প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ, পানি প্রবাহের তীব্রতা কমানো ও অক্সিজেন সংশ্লেষণ প্রক্রিয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। পাথর উত্তোলনের ফলে পানির গুণমান ও পরিবেশে ক্ষতিকর প্রভাব পড়ছে, প্লাবনের সম্ভাবনা বেড়েছে এবং পানি দূষিত হচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সাদা পাথর পর্যটন স্পটটি গত ১০–১২ বছরে পরিচিতি লাভ করেছে। ২০১২ সালের পর সড়কের উন্নতির কারণে সিলেট শহর থেকে মাত্র ৪০ মিনিটে এখানে পৌঁছানো যায়। তবে এই জনপ্রিয়তা এবং সহজ যাতায়াতই পাথর লুটের প্রবণতা বাড়িয়েছে।
সাদা পাথর সংরক্ষণে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানের ফলশ্রুতিতে সাম্প্রতিক দিনে লুট কিছুটা কমেছে, তবে দীর্ঘমেয়াদি সমাধান এখনও প্রয়োজন।