"সুশাসনের জন্য জনগণের দাবি: দুই মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী সীমাবদ্ধ, পিআর পদ্ধতিতে উচ্চকক্ষে আসন বণ্টন"

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) ‘সুশাসনের জন্য নাগরিক’ (সুজন) কর্তৃক করানো জাতীয় সনদ চূড়ান্তকরণের জন্য জনমত জরিপের ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে। মে থেকে জুলাই পর্যন্ত দেশের ১,৩৭৩ জনের মতামত ও ১৫টি নাগরিক সংলাপের মাধ্যমে সংগৃহীত তথ্য থেকে দেখা গেছে, দেশের জনসাধারণ গণতান্ত্রিক সংস্কারের ব্যাপক সমর্থক।
জরিপ অনুযায়ী:
১. ৮৯ শতাংশ মানুষ সর্বোচ্চ দুই মেয়াদের বেশি প্রধানমন্ত্রী পদে থাকার বিরোধিতা করেন।
২. ৭১ শতাংশ মানুষ উচ্চকক্ষে সংখ্যানুপাতিক (পিআর) পদ্ধতিতে আসন বণ্টনের পক্ষে।
৩. ৬৯ শতাংশ মানুষ দ্বিকক্ষবিশিষ্ট আইনসভার পক্ষে মত দিয়েছেন।
৪. একই ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রী, দলীয় প্রধান ও সংসদনেতা একসঙ্গে হতে পারবেন না—এ প্রস্তাবে ৮৭ শতাংশ সমর্থন।
৫. নিম্নকক্ষে নারী আসনের জন্য ঘূর্ণমান পদ্ধতির পক্ষে ৬৩%, আর উচ্চকক্ষে ৩০টি নারী আসন সংরক্ষণের পক্ষে ৬৯% জনমত।
৬. বিরোধী দলের একজনকে নিম্নকক্ষে ডেপুটি স্পিকার ও উচ্চকক্ষে মনোনয়ন দেয়ার পক্ষে যথাক্রমে ৮৬% ও ৮২% মানুষ।
৭. নির্বাচনের সময় নির্বাহী বিভাগের ভোট প্রভাবিতকারী কর্মকাণ্ডের জন্য নির্বাচন কমিশনের অনুমতি বাধ্যতামূলক করার পক্ষে ৮৭%।
৮. নির্বাচনের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে নির্বাচন কমিশনের সুষ্ঠুতা ও গ্রহণযোগ্যতার সার্টিফিকেট প্রকাশের পক্ষে ৮৬%।
৯. নির্বাচনী ব্যয় নিরীক্ষণ ও অসত্য তথ্য দিলে প্রার্থিতা বা ফলাফল বাতিল করার পক্ষে ৮৮%।
১০. ৯২% মনে করেন, চিহ্নিত সন্ত্রাসী, দুর্নীতিগ্রস্ত, চাঁদাবাজ ও সাজাপ্রাপ্তদের দলীয় সদস্য হওয়া উচিৎ নয়।
সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, "এই জরিপ প্রমাণ করে জনগণ সংস্কারের পক্ষে এবং বর্তমান ব্যবস্থা গণতন্ত্রকে দুর্বল করেছে। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য আমূল পরিবর্তন জরুরি।"
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌসও এই জনমত জরিপের ফলাফলকে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে উল্লেখ করেন।