‘জনগণের ক্ষমতা অবজ্ঞা করা যাবে না’—তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল

তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিলের রায়ের বিরুদ্ধে দায়ের করা আপিল গ্রহণ করেছে আপিল বিভাগ। এ বিষয়ে আগামী ২১ অক্টোবর শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।
বুধবার (২৭ আগস্ট) দুপুরে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন ৭ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ দিন ধার্য করেন। এর আগে দ্বিতীয় দিনের মতো রিভিউ শুনানি হয়।
শুনানিতে প্রধান বিচারপতি বলেন, “তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফিরিয়ে দিয়ে সাময়িক সমাধান দিতে চায় না আপিল বিভাগ। আমরা কার্যকর সমাধান চাই, যাতে বিষয়টি বারবার বিঘ্নিত না হয়।”
তিনি আরও প্রশ্ন তোলেন— “যদি তত্ত্বাবধায়ক ফিরিয়ে দেই, তবে এটি কবে থেকে কার্যকর হবে?”
অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান আদালতে বলেন, গত দেড় দশকে দেশের মানুষ শাসিত হওয়ার বদলে নানা ধরনের শোষণের শিকার হয়েছে। গুম, খুন, বিচারবহির্ভূত হত্যা ও রাজনৈতিক নিপীড়নের কারণে মানুষ ন্যায়বিচার পায়নি।
তিনি মন্তব্য করেন, এই কারণেই গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের পতন ঘটেছে। আর সেই রাজপথ থেকেই নির্ধারিত হয়েছে কে হবেন প্রধান বিচারপতি এবং কে সরকার প্রধান। জনগণের এই ক্ষমতাকে অবজ্ঞা করলে বিপ্লবের সৃষ্টি হয় বলেও তিনি সতর্ক করেন।
প্রেক্ষাপট
১. ১৯৯৬ সালে ত্রয়োদশ সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা যুক্ত হয়।
২. এর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে তিন আইনজীবী হাইকোর্টে রিট করেন।
৩. ২০১১ সালের ১০ মে আপিল বিভাগ এই ব্যবস্থা বাতিল ঘোষণা করে।
৪. পরবর্তীতে ২০১১ সালের ৩০ জুন জাতীয় সংসদ পাস করে পঞ্চদশ সংশোধনী আইন, যার মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বিলুপ্ত হয়।
৫. তবে গত ১৭ ডিসেম্বর ২০২৪ হাইকোর্টের এক বেঞ্চ ওই সংশোধনীর ২০ ও ২১ ধারা অসাংবিধানিক ঘোষণা করে রায় দেন।
আগামী ২১ অক্টোবরের শুনানি ঘিরে এখন রাজনৈতিক অঙ্গন ও আইন মহলে ব্যাপক আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে।