ঢাকা মহানগর ডিবির সাবেক প্রধান হারুনসহ ১৮ কর্মকর্তা সাময়িক বরখাস্ত!

বাংলাদেশ পুলিশের শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে এবার বড় ধরনের পদক্ষেপ নিল সরকার। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের সাবেক প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদসহ পুলিশের বিভিন্ন স্তরের ১৮ কর্মকর্তাকে চাকরি থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। পুলিশের সাম্প্রতিক ইতিহাসে এটিকে অনেকেই নজিরবিহীন ঘটনা বলছেন।
সোমবার (১৮ আগস্ট) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে এতে সই করেন উপসচিব নাসিমুল গনি।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮-এর সংশ্লিষ্ট ধারায় ‘পলায়নজনিত অপরাধে অভিযুক্ত’ হওয়ায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আইন অনুযায়ী এটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
প্রশাসনিক দিক থেকে বিষয়টি ‘সাময়িক বরখাস্ত’ হলেও, এটি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ক্যারিয়ারে গুরুতর প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
বরখাস্ত হওয়া ১৮ কর্মকর্তার মধ্যে রয়েছেন—
তিনজন উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি),
১. ছয়জন অতিরিক্ত ডিআইজি,
২. চারজন পুলিশ সুপার (এসপি),
৩. চারজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি)
৪. এবং একজন সহকারী পুলিশ সুপার।
তাদের মধ্যে অন্যতম আলোচিত নাম মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ, যিনি এক সময় ঢাকার গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) প্রধান ছিলেন। নানা কর্মকাণ্ড ও বিতর্কিত ভূমিকায় দীর্ঘদিন আলোচনায় ছিলেন তিনি।
পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত হওয়া কর্মকর্তারা বিধি অনুযায়ী ‘খোরপোষ ভাতা’ পাবেন। তবে এই সিদ্ধান্ত কেবল প্রশাসনিক পদক্ষেপ নয়, পুলিশের অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা রক্ষার দিক থেকেও এটি একটি বড় বার্তা বলে মনে করা হচ্ছে।
পুলিশের একাধিক অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মনে করছেন, এ ধরনের পদক্ষেপ ভবিষ্যতে শৃঙ্খলা ও দায়বদ্ধতা বাড়াতে ভূমিকা রাখবে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ইতিমধ্যে এ সিদ্ধান্ত নিয়ে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়েছে। অনেকেই বলছেন, দীর্ঘদিন ধরে পুলিশের মধ্যে যেসব অনিয়ম ও প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ ওঠে আসছিল, এ পদক্ষেপ তারই প্রতিফলন। তবে কেউ কেউ মনে করছেন, শুধু সাময়িক বরখাস্ত নয়, সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত দোষীদের স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা উচিত।
হারুন অর রশীদসহ ১৮ পুলিশ কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করার ঘটনাটি দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভেতর শুদ্ধি অভিযানের এক নতুন ধাপ হিসেবে দেখা হচ্ছে। এ সিদ্ধান্ত শুধু বাহিনীর ভেতরই নয়, প্রশাসনিক মহলেও বড় ধরনের আলোচনার জন্ম দিয়েছে।