গোপালগঞ্জে এনসিপি পদযাত্রা ঘিরে সহিংসতা: আরও একটি হত্যা মামলা, মোট মামলা ১২

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) ‘জুলাই পদযাত্রা’ ঘিরে সহিংসতা ও সংঘর্ষের ঘটনায় গোপালগঞ্জে আরও একটি হত্যা মামলা হয়েছে। এতে করে সদর থানায় সংঘটিত মোট মামলার সংখ্যা দাঁড়াল ১২টি, যার মধ্যে পাঁচটি হত্যা মামলা।
গত শনিবার (২৬ জুলাই) সংঘর্ষে নিহত রমজান মুন্সীর ভাই জামাল মুন্সী বাদী হয়ে দণ্ডবিধির ৩৪ ও ৩০২ ধারায় গোপালগঞ্জ সদর থানায় মামলাটি দায়ের করেন। তবে এজাহারে কোনো আসামির নাম উল্লেখ করা হয়নি এবং অজ্ঞাত আসামির সংখ্যাও নির্ধারণ করা হয়নি।
গোপালগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মির মোহাম্মদ সাজেদুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
গত ১৬ জুলাই, এনসিপির ‘জুলাই পদযাত্রা’কে কেন্দ্র করে গোপালগঞ্জ শহরে প্রচণ্ড যানজটের সৃষ্টি হয়। সেদিন বিকেল সাড়ে ৩টায় রমজান মুন্সী (৩২) তার অটোরিকশা গ্যারেজে রেখে খাবার খেতে বাসায় রওনা দেন। শহরের লঞ্চঘাট এলাকায় পৌঁছালে তিনি দেখেন, অজ্ঞাত কয়েক হাজার লোক দেশীয় অস্ত্রসহ মিছিল করে পৌরপার্কের দিকে যাচ্ছে।
একপর্যায়ে তারা যৌথ বাহিনীর ওপর হামলা চালায়। যৌথ বাহিনী আত্মরক্ষার্থে পাল্টা ধাওয়া দিলে রমজান লঞ্চঘাটের পাশের একটি এলাকায় আশ্রয় নেন। ঠিক তখনই হামলাকারীদের মধ্যে ওঁৎ পেতে থাকা দুস্কৃতকারীরা যৌথ বাহিনীকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। পাল্টা গুলিতে রমজানের বুকের ডান পাঁজরে গুলি লাগে।
স্থানীয়রা তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। পরে অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়, যেখানে ১৭ জুলাই রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। পরদিন ময়নাতদন্ত শেষে রমজানের মরদেহ গোপালগঞ্জ এনে দাফন করা হয়।
১৬ জুলাইয়ের পদযাত্রায় আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা এনসিপির সমাবেশে হামলা চালায় বলে অভিযোগ ওঠে। সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত পাঁচজন নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক।
ঘটনার দিন বিকেলেই জেলা প্রশাসক মুহম্মদ কামরুজ্জামান ১৪৪ ধারা জারি করেন এবং রাতেই কারফিউ জারি করা হয়। পরবর্তীতে কয়েক দফা মেয়াদ বাড়িয়ে গত ২০ জুলাই রাত ৮টা থেকে কারফিউ শিথিল করা হয়।