ফৌজদারি মামলায় ভুয়া আসামি ঠেকাতে নতুন বিধি সংযোজন: আইন উপদেষ্টা

ভুয়া মামলা ও নিরপরাধ ব্যক্তিদের আসামি করার প্রবণতা রোধে ফৌজদারি কার্যবিধিতে নতুন বিধি সংযোজন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল। রোববার (৩০ জুন) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ তথ্য জানান। ব্রিফিংয়ে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
আইন উপদেষ্টা জানান, ভুয়া মামলা এবং নির্দোষ ব্যক্তিকে মামলায় জড়িয়ে ফেলার মতো অনৈতিক ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড রোধে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৭৩(ক)/১৭৩(অ) নামে দুটি নতুন বিধান যুক্ত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, “ফৌজদারি কার্যবিধিতে যখন একটি হত্যা মামলা দায়ের হয়, তখন তদন্ত শেষ করতেই কয়েক বছর লেগে যায়। এর মাঝে দেখা যায়, শত শত আসামির নাম জুড়ে দেওয়া হয়, অনেক ক্ষেত্রে উদ্দেশ্যমূলকভাবে নিরপরাধদেরও জড়ানো হয়। এসব বিষয় থেকে পরিত্রাণ পেতেই সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে পরামর্শ করে আমরা নতুন বিধানটি সংযুক্ত করেছি।”
নতুন বিধান অনুযায়ী, কোনো পুলিশ কমিশনার বা এসপি পদমর্যাদার কর্মকর্তা যৌক্তিক মনে করলে মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিতে পারবেন প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদন (Preliminary Investigation Report) ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে জমা দিতে। এরপর ম্যাজিস্ট্রেট যদি প্রমাণ পান যে অভিযুক্ত ব্যক্তি নির্দোষ এবং তার বিরুদ্ধে কোনো সুনির্দিষ্ট সাক্ষ্যপ্রমাণ নেই, তাহলে বিচার শুরুর আগেই ওই ব্যক্তিকে মামলা থেকে অব্যাহতি দিতে পারবেন।
ড. আসিফ নজরুল আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, “এই বিধানটি কার্যকর হলে ভুয়া মামলা, গ্রেপ্তার বাণিজ্য ও মামলা বাণিজ্যের বিরুদ্ধে পুলিশের পাশাপাশি আদালতও সমন্বিতভাবে ব্যবস্থা নিতে পারবে। ফলে নিরপরাধ নাগরিকরা অকারণে হয়রানির শিকার হবেন না।” এ সময় তিনি কুমিল্লার মুরাদনগরে সংঘটিত সাম্প্রতিক ধর্ষণের ঘটনা নিয়ে বলেন, “আমরা এই ঘটনায় গভীরভাবে মর্মাহত। সরকারের পক্ষ থেকে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। প্রধান আসামিসহ অপরাধে সহায়তাকারীদেরও আইনের আওতায় আনা হয়েছে।”
তিনি আরও জানান, “ধর্ষণসংক্রান্ত আইনে আমরা আগেই সময়োপযোগী সংশোধন এনেছি। মাগুরা ধর্ষণ মামলায় তার প্রমাণও মিলেছে। মুরাদনগরের ঘটনাতেও আমরা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দ্রুত বিচার সম্পন্ন করব।”