আল-আকসা চত্বরে ইহুদিদের নৃত্য-সঙ্গীতের অনুমতি, সমালোচনার মুখে ইসরায়েল

ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের তৃতীয় পবিত্র মসজিদ আল-আকসার চত্বরে এবার পশ্চিম তীরে বসতি স্থাপনকারী ইহুদি দর্শনার্থীদের নাচ-গান এবং বাধাহীন ঘোরাফেরার অনুমতি দিয়েছে ইসরায়েল। বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) দেশটির একাধিক সংবাদমাধ্যম এই খবর নিশ্চিত করেছে।
ইসরায়েলি টেলিভিশন চ্যানেল সেভেন জানায়, প্রথমবারের মতো আল-আকসা চত্বরে ইহুদি দর্শনার্থীদের সঙ্গীত, নৃত্য ও মুক্ত চলাচলের সুযোগ দেওয়া হয়েছে। সরকারের একটি উচ্চ পর্যায়ের সূত্রের বরাতে তারা জানিয়েছে, জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক মন্ত্রী ইতামার বেন-গেভিরের নতুন নীতির আওতায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
কট্টর ডানপন্থি মন্ত্রীর বিতর্কিত নির্দেশ
প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর জোটসঙ্গী বেন-গেভির ইসরায়েলের কট্টর ডানপন্থি দল জিউইশ পাওয়ার পার্টির শীর্ষ নেতা এবং একজন পরিচিত অবৈধ বসতি স্থাপনকারী। বর্তমানে তিনি স্বরাষ্ট্র ও পুলিশ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বেও আছেন।
চ্যানেল সেভেনের প্রতিবেদন অনুযায়ী, তিন সপ্তাহ আগে কয়েকটি ইহুদি ধর্মীয় সংস্থা বেন-গেভিরের সঙ্গে বৈঠকে বসে এবং আল-আকসায় ইহুদি উপস্থিতি বাড়ানোর আহ্বান জানায়। বৈঠকের পরই তিনি ওই ধর্মীয় সংস্থাগুলোকে আশ্বস্ত করে বলেন, “আমি চাই পুরো আল-আকসা চত্বরজুড়ে সঙ্গীতের ধ্বনি বেজে উঠুক।”
আদেশ কার্যকর, তবে বিতর্ক অব্যাহত
বলা হয়েছে, আল-আকসা চত্বরের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশ বাহিনীকে ইতোমধ্যে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, যাতে সঙ্গীত, নৃত্য ও দর্শনার্থীদের চলাফেরায় কোনো বাধা না দেওয়া হয়।
যদিও এখন পর্যন্ত ইসরায়েলি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো বিবৃতি দেয়নি। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ২০২২ সালে বেন-গেভির জাতীয় নিরাপত্তা মন্ত্রী হওয়ার পর থেকে চত্বরে ধর্মীয় বিধিনিষেধ ভঙ্গের ঘটনা বেড়েছে।
আন্তর্জাতিক উদ্বেগ ও ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট
আল-আকসা মসজিদ মুসলিমদের কাছে ঐতিহাসিক ও ধর্মীয়ভাবে অত্যন্ত পবিত্র স্থান। ইসলামের শুরুর যুগে এটিই ছিল মুসলিমদের প্রথম কেবলা। ১৯৬৭ সালের আরব-ইসরায়েল যুদ্ধে পূর্ব জেরুজালেমসহ আল-আকসা এলাকা ইসরায়েলের দখলে চলে যায়। যদিও ১৯৮০ সালে পুরো পূর্ব জেরুজালেমকে নিজেদের রাজধানী ঘোষণা করে ইসরায়েল, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় আজও এই দাবি স্বীকৃতি দেয়নি।
ধর্মীয় বিধিনিষেধ লঙ্ঘনের এই পদক্ষেপকে কেন্দ্র করে নতুন করে উত্তেজনা ছড়ানোর আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। একইসঙ্গে মুসলিম বিশ্বে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হতে পারে বলেও মত দিয়েছেন পর্যবেক্ষকরা।
