বৈশ্বিক ও অভ্যন্তরীণ চ্যালেঞ্জের মুখে বাংলাদেশের অর্থনীতি: আইএমএফের সতর্কবার্তা ও সুপারিশ

আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিল (আইএমএফ) প্রকাশিত সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশের অর্থনীতি আগামী দিনে বৈশ্বিক ও অভ্যন্তরীণ নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে এগোতে হবে। বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানিতে বাড়তি শুল্ক আরোপ এবং মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতা বাংলাদেশের অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
প্রধান চ্যালেঞ্জসমূহ:
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পোশাকসহ পণ্যের ওপর বাড়তি শুল্ক আরোপ, যা রপ্তানি আয়ের বড় অংশকে প্রভাবিত করবে।
ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের দীর্ঘমেয়াদী নেতিবাচক প্রভাব।
মধ্যপ্রাচ্যের সংকট, যা রেমিট্যান্স প্রবাহ ও জ্বালানি মূল্য বৃদ্ধির মাধ্যমে অর্থনীতিতে চাপ সৃষ্টি করতে পারে।
অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং ব্যাংকগুলোর ঋণ বিতরণের সক্ষমতা কমে যাওয়া।
সরকারের রাজস্ব আয় কম হওয়ায় ব্যয়ের সীমাবদ্ধতা ও বেসরকারি খাতে বিনিয়োগের ধীরগতি।
আইএমএফের সতর্কতা ও পূর্বাভাস:
বৈশ্বিক পণ্যের দাম বৃদ্ধির কারণে আমদানি ব্যয় বেড়ে বৈদেশিক মুদ্রার ওপর চাপ বাড়বে। চলতি অর্থবছরে বৈদেশিক লেনদেনের ঘাটতি জিডিপির সাড়ে ৩ শতাংশে নেমে আসলেও আগামী বছরে এটি ১০ শতাংশ ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। এতে ডলারের বাজারে চাপ বৃদ্ধি পাবে।
আইএমএফের সুপারিশ:
জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ ও ভর্তুকি হ্রাস করা।
রপ্তানিতে একক পণ্যের ওপর নির্ভরতা কমিয়ে বহুমুখী করা।
কৃষিপণ্যের উৎপাদন বাড়িয়ে আমদানি নির্ভরতা কমানো।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ও উন্নয়ন প্রকল্পে সংস্কার দ্রুত সম্পন্ন করা।
ই-রিটার্ন পদ্ধতি চালু করে করদাতাদের হয়রানি কমানো।
সরকারি লেনদেনের অন্তত ৫০ শতাংশ অনলাইনে সম্পন্ন করা এবং সরকারি ঋণ শ্রেণিবিন্যাস করা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সিদ্ধান্ত গ্রহণে স্বাধীনতা নিশ্চিত করা ও মুদ্রানীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে পূর্ণ ক্ষমতা দেওয়া।
সময়ের সীমাবদ্ধতা:
আইএমএফ প্রতিবেদন অনুযায়ী, বেশিরভাগ সংস্কার কার্যক্রম ২০২৩ সালের জুন ও ডিসেম্বর মাসের মধ্যে সম্পন্ন করতে হবে, আর মুদ্রানীতি ও ব্যাংকিং ব্যবস্থাপনায় স্বাধীনতা আগামী ২০২৪ সালের জানুয়ারির মধ্যে নিশ্চিত করতে হবে।
