কর্মস্থলে অনুপস্থিত: নোবিপ্রবির তিন শিক্ষক বরখাস্ত

নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) তিন শিক্ষককে চাকরি থেকে বরখাস্ত করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কর্মস্থলে অননুমোদিত অনুপস্থিতি, শিক্ষা ছুটির শর্ত লঙ্ঘন ও কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই বিদেশে অবস্থানের অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
রবিবার (৩০ জুন) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার তামজিদ হোসেন চৌধুরীর স্বাক্ষরিত একাধিক নোটিশে বিষয়টি জানানো হয়।
রিজেন্ট বোর্ডের ৬৫তম সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বরখাস্ত হওয়া তিন শিক্ষক হলেন - মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. মেহেদী হাসান চৌধুরী, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক জিনাত হোসেন এবং ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক ড. এস এম নজরুল ইসলাম।
রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক জিনাত হোসেনকে দেওয়া নোটিশে উল্লেখ করা হয়, তিনি ২০১৮ সালের ১ অক্টোবর থেকে ২০২৪ সালের ১৩ জানুয়ারি পর্যন্ত পাঁচ বছরের পিএইচডি শিক্ষা ছুটিতে ছিলেন। ছুটির মেয়াদ শেষে ১৪ জানুয়ারি বিভাগে যোগ দিলেও পরে আর কর্মস্থলে আসেননি তিনি। পরবর্তীতে কারণ দর্শানোর নোটিশ থেকে জানা যায়, তিনি বার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পোস্ট-ডক্টরাল গবেষণার জন্য সুইজারল্যান্ড গেছেন। কিন্তু এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অনুমতি নেননি বা কোনো জিও (সরকারি আদেশ) গ্রহণ করেননি। বারবার নোটিশ পাঠানো হলেও তিনি কর্মস্থলে যোগ দেননি।
এছাড়া, ছুটির নীতিমালা লঙ্ঘনের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তি ভঙ্গ করায় তাকে ছুটিকালীন সমুদয় অর্থ সুদসহ ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে, মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মেহেদী হাসান চৌধুরী শিক্ষা ছুটি শেষে ২০২২ সালের ৮ সেপ্টেম্বর সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য যোগদান করলেও পরে আর কর্মস্থলে উপস্থিত হননি। নোটিশে বলা হয়, তার এমন আচরণ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছুটির নীতিমালার একাধিক ধারা লঙ্ঘন করেছে।
ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক ড. এস এম নজরুল ইসলাম ২০২২ সালের ২৫ অক্টোবর থেকে অনুমতি ছাড়া কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকেন এবং বিদেশে অবস্থান করেন। নোটিশে বলা হয়, তাকে ব্যাখ্যা চাইলে তিনি কোনো ধরনের জবাব দেননি।
তিন শিক্ষককে সরকারি কর্মচারি (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা ২০১৮-এর ২(চ) ধারা অনুযায়ী ‘পলায়ন’-এর অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করা হয়।
রিজেন্ট বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে এবং ছুটিকালীন সময়ে প্রাপ্ত সমুদয় অর্থ সুদসহ এক মাসের মধ্যে পরিশোধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অর্থ পরিশোধ না হলে সংশ্লিষ্ট দেশের দূতাবাস এবং চাকরিদাতা প্রতিষ্ঠানকে অবহিত করার কথাও নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে।