প্রক্সি জালিয়াতির মাধ্যমে ভর্তি হতে এসে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সহ চক্রের ৩ সদস্য আটক

গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় প্রক্সি জালিয়াতির মাধ্যমে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে চূড়ান্ত ভর্তি হতে এসে আটক হয়েছেন এক ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী। এর পর তাকে সহযোগিতা করতে আসা আরো ২ জনকে আটক করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এদের মধ্যে একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের বিগত বছরের (১৮ আবর্তনের) শিক্ষার্থীর। জিজ্ঞাসাবাদের জানা গেছে বিশাল একটি চক্র দীর্ঘদিন ধরে প্রক্সি জালিয়াতির মাধ্যমে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ভর্তি করে আসছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) মধ্যাহ্ন ভোজের বিরতির পর ওই শিক্ষার্থী ভর্তি হতে এলে তার আচরণ সন্দেহাতিক মনে হওয়ায় তাকে জিজ্ঞেসাবাদ করা হয়। তার দুই সহযোগীকে আটকের পর রাত নয়টার কিছু পর তাদের ত্রিশাল থানায় হস্তান্তর করা হয়।
ভর্তিচ্ছু এ শিক্ষার্থীর নাম উবায়েত হাসান আফিক।প্রক্সি পরীক্ষার্থীর মাধ্যমে জামালপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দেন। প্রক্সি দিয়ে হয়েছে গুচ্ছে ৭৬তম। এই চক্রের হোতা পনির উদ্দিন খান পাভেল।
সিএসই বিভাগের শিক্ষকরা জানান, কাগজপত্র ভেরিফিকেশনের সময় তার স্বাক্ষর লেখার ধরন দেখে তাতে সন্দেহ হয়। এরপর তারা জিজ্ঞাসাবাদ করলে অসংলগ্ন তথ্য দেয়। এসময় বাইরে থাকা তার এক সহযোগীর সাথে কথা বলল তাদের দুজনের কথায় আরো সন্দেহ বাড়ে। একপর্যায়ে তারা বিশ্ববিদ্যালয় থাকার তাদের জনৈক ভাইকে শিক্ষকদের সাথে ফোনে কথা বলিয়ে দেন। সেই ফোন নাম্বার ও নামের সুত্র ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাটাবেইজ থেকে ওই শিক্ষার্থী পরিচয় নিশ্চিত হবার পর তাকে বিভাগে ডেকে আনা হয়। তাদের তিনজনের কথা মিল পেলে শিক্ষকদের সন্দেহ আরো বারে। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই শিক্ষার্থীর মোবাইলফোন জব্দ করলে তার থেকে জালিয়াতির প্রমান মেলে।
তথ্য প্রমাণ দেখে নিশ্চিত হওয়া গেছে যে চক্রটি আনেক আগে থেকেই এই ধরনের জালিয়াতি করে আসছে। প্রাথমিকভাবে আরো একজন একইভাবে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছেন বলে জানা গেছে। এছাড়াও গুচ্ছ ভর্তি পদ্ধতির আওতায় কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে জালিয়াতির মাধ্যমে ভর্তি হওয়ার প্রমাণ মিলেছে।
এ ব্যাপারে সিএসই বিভাগের বিভাগীয় প্রধান বলেন, আজকে আমাদের ভর্তি কার্যক্রমের শেষ দিন ছিল আগেই সিএসই বিভাগের ৪০জনের মধ্যে ৩৯ জন ভর্তি হয়ে হয়ে যাওয়ায় আমরা শেষ কেন্ডিডেটের অপেক্ষায় ছিলাম লাঞ্চের পর সে আসলে আর স্বাক্ষর ও লেখার স্টাইল দেখে সন্দেহ হয়। এরপর তাকে কিছু বেসিক প্রশ্ন করা হলে তার উত্তর দিতে পারছিল না। তার সহযোগী এই বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর ফোন চেক করে জালিয়াতির বিষয়টি নিশ্চিত হই।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মাহবুবুর রহমান জানিয়েছেন,
"এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় বাদী হয়ে একটি মামলা করবে যেটি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে এবং আগামী রবিবার একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।"