রাবি'তে 'পিএসসি' সংস্কারের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ( রাবি) পাবলিক সার্ভিস কমিশনের( পিএসসি) যৌক্তিক সংস্কার, ৮ দফা দাবি বাস্তবায়ন, প্রশ্নফাঁসে জড়িতদের শাস্তির দাবি ও অনশনরত শিক্ষার্থীদের প্রতি সংহতি জানিয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেন শিক্ষার্থীরা।
রবিবার (২৭ এপ্রিল) বিকেল সাড়ে ৫টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করে আন্দোলনকারীরা। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে জোহা চত্বরে এসে থামে এবং সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে আন্দোলনকারীরা।
মিছিলে তারা নানা রকম স্লােগান দেয় যেমন- ‘এই মুহূর্তে দরকার পিএসসির সংস্কার’, ‘৮ দফা মানতে হবে মানতে হবে’,‘ আমাদের দাবি আমাদের দাবি মানতে হবে’, ‘আবেদ গং' এর কালো হাত ভেঙ্গে দেও গুড়িয়ে দাও’, ‘নন ক্যাডার বিধি২৩ বাতিল চাই বাতিল চাই’, ‘আবেদ গং'এর বিরুদ্ধে ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, ‘প্রশ্ন ফাঁসের বিরুদ্ধে ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, ‘সিন্ডিকেট না মুক্তি - মুক্তি মুক্তি, জুলাইয়ের অঙ্গীকার পিএসসি সংস্কার’ ইত্যাদি ।
শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো— ৪৫ তম বিসিএসে ভাইভার নম্বর ১০০ করতে হবে। প্রিলিমিনারি, লিখিত ও ভাইভার নম্বর প্রকাশ করতে হবে; প্রতিটি বিসিএসের নির্দিষ্ট রোডম্যাপ প্রকাশ করতে হবে; সুপারিশ প্রক্রিয়া নিরপেক্ষ করার লক্ষ্যে ভ্যারিফিকেশনে হয়রানি লাঘবের ব্যবস্থা এবং গেজেট প্রণয়ন স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ করতে হবে; ভাইভা উত্তীর্ণ সবার চাকরি নিশ্চিত করতে হবে; প্রাইভেট সেক্টরে আবেদন ফি সহনীয় পর্যায়ে আনার লক্ষ্যে আগামী ৭ দিনের মধ্যে কমিশন গঠন করতে হবে; বিসিএসসহ সব চাকরি পরীক্ষার ভাইভা বোর্ডে নিরপেক্ষ লোক নিয়োগ দিতে হবে; বিসিএস প্রশ্ন ফাঁসকারী চক্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে, অন্যথায় নতুন করে পরীক্ষা নিতে হবে; পিএসসির সদস্য পরিবর্তন করতে হবে। প্রশ্ন ফাঁস হওয়া ৪৬ তম বিসিএস বাতিল করতে হবে।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক মেশকাত চৌধুরী মিশু বলেন, সরকার গঠন হওয়ার পর অনেক সংস্কার কমিশন গঠিত হয়েছে, কিন্তু শিক্ষার কোনাে সংস্কার হয়নি। প্রত্যেক বছর লাখ লাখ শিক্ষার্থী তাদের শিক্ষাজীবন শেষ করে বাংলাদেশকে সার্ভ করার জন্য তৈরি হচ্ছে কিন্তু তৈরি হওয়ার পরে তাদের একটা অসুস্থ প্রতিযোগিতার মধ্যে যেতে হচ্ছে বছরের পর বছর। সেখানে স্বজন প্রীতি চলছে, অবৈধভাবে প্রশ্ন ফাঁস করে তাদের প্রিয়জনদেরকে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। আমাদের দাবি শুধু পিএসসি সংস্কার নয়, পুরো চাকরি ব্যবস্থাটাকে সংস্কার করা। দলীয় বিবেচনা ভুলে গিয়ে মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে নিয়োগ দিতে হবে।
সমাবেশে রাবির সাবেক সমন্বয়ক সালাউদ্দিন আম্মার বলেন, নয় মাস আগে আমরা আন্দোলন করেছিলাম দেশের যৌক্তিক সংস্কারের জন্য। কিন্তু সরকার পরিবর্তন হয়ে গেলেও, কোনো ধরনের উল্লেখযোগ্য সংস্কার এখনো হয়নি। বিভিন্ন ইস্যুতে আমলারা এখনো আগের মতই নির্যাতন করে যাচ্ছে৷ আমি মনে করি, এক আবেদ আলী কখনোই একা প্রশ্ন ফাঁস করতে পারবে না। এর সাথে অবশ্যই ২০০ থেকে ৩০০ জন আমলা জড়িত আছে। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো, এখন পর্যন্ত আবেদ আলীর কোনো বিচার হয়নি এবং যারা জড়িত ছিল তাদের সামনে আনা হয়নি। আপনার যদি দেখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়া পিএসসি থেকে কেউকে নেওয়া হয়নি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়া কী মেধাবীর জন্ম হয় না? আমরা আট দফা দাবির সাথে পূর্ণ একাত্মতা পোষণ করছি।
উল্লে্যূ, সমাবেশটি পরিচালনা করেন ফোকলোর বিভাগের শিক্ষার্থী আল-শাহরিয়ার শুভ। এসময় বিভিন্ন বিভাগের প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।