প্রোস্টেট ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সহায়ক ১০টি খাবার

পুরুষদের মধ্যে প্রোস্টেট ক্যান্সার একটি সাধারণ ও ক্রমবর্ধমান রোগ। বিশেষ করে ৫০ বছরের ঊর্ধ্বে পুরুষরা এই ঝুঁকিতে বেশি থাকেন। বয়স, জিনগত কারণ ও জীবনযাত্রার পাশাপাশি খাদ্যাভ্যাসও এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রাখে।
গবেষণায় দেখা গেছে, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, প্রদাহ-বিরোধী যৌগ এবং ফাইটোকেমিক্যাল সমৃদ্ধ কিছু নির্দিষ্ট খাবার প্রোস্টেট কোষকে সুরক্ষিত রাখতে ও ক্যান্সারের সম্ভাবনা কমাতে সহায়ক হতে পারে। নিচে উল্লেখ করা হলো এমন ১০টি গুরুত্বপূর্ণ খাবার—
১. টমেটো:
টমেটোতে রয়েছে লাইকোপিন নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা কোষের ক্ষতি রোধে কার্যকর। রান্না করা টমেটোতে লাইকোপিন শোষণ আরও ভালোভাবে হয়, যা প্রোস্টেট স্বাস্থ্য রক্ষায় সহায়ক।
২. ব্রোকলি:
ব্রোকলি ও অন্যান্য ক্রুসিফেরাস সবজিতে থাকা সালফোরাফেন নামক যৌগ ক্যান্সার কোষকে ধ্বংসে সহায়তা করে। নিয়মিত এসব সবজি খেলে প্রোস্টেট কোষের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি কমে এবং প্রদাহ হ্রাস পায়।
৩. গ্রিন টি:
গ্রিন টিতে রয়েছে ক্যাটেচিন নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধি রোধে সহায়তা করে। এটি নিয়মিত পান করলে প্রোস্টেট ক্যান্সারের ঝুঁকি হ্রাস পেতে পারে।
৪. ডালিম:
ডালিমে রয়েছে পলিফেনল, যা টিউমারের বৃদ্ধিকে ধীর করে ও শরীরের অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমায়। ডালিমের রস বা বীজ নিয়মিত খাওয়া উপকারি।
৫. চর্বিযুক্ত মাছ:
সামুদ্রিক চর্বিযুক্ত মাছ যেমন স্যামন, ম্যাকেরেল বা সারডিনে থাকে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, যা প্রদাহ হ্রাস করে এবং আক্রমণাত্মক প্রোস্টেট ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে পারে।
৬. সয়া:
সয়াবিনে থাকা আইসোফ্লাভোন প্রোস্টেট ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধিতে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে। সয়া-সমৃদ্ধ খাদ্য গ্রহণকারী দেশগুলোতে এই ক্যান্সারের হার তুলনামূলকভাবে কম।
৭. ব্রাজিল বাদাম:
ব্রাজিল বাদামে রয়েছে সেলেনিয়াম, যা কোষের সুরক্ষা বাড়িয়ে প্রোস্টেট ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে পারে। প্রতিদিন ১-২টি বাদাম খাওয়াই যথেষ্ট।
৮. বেরি:
ব্লুবেরি, স্ট্রবেরি, রাস্পবেরি ইত্যাদি বেরিতে উচ্চমাত্রার ভিটামিন সি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে, যা কোষের ক্ষয় রোধ করে ও শরীর ডিটক্সিফাই করতে সাহায্য করে।
৯. হলুদ:
হলুদের সক্রিয় উপাদান কারকিউমিনের প্রদাহনাশক ও ক্যান্সার প্রতিরোধী গুণ রয়েছে। এটি টিউমারের বৃদ্ধি রোধ করতে কার্যকর, বিশেষ করে যখন তা কালো মরিচের সঙ্গে খাওয়া হয়।
১০. গোটা শস্য:
ব্রাউন রাইস, ওটস ও অন্যান্য গোটা শস্য হরমোন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং টিউমারের বৃদ্ধি কমাতে পারে। এগুলো স্বাস্থ্যকর ওজন নিয়ন্ত্রণেও ভূমিকা রাখে।
প্রোস্টেট ক্যান্সার প্রতিরোধে জীবনযাত্রা ও খাদ্যাভ্যাসে সচেতনতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। উপরে তালিকাভুক্ত খাবারগুলো নিয়মিত খাদ্য তালিকায় রাখা এই রোগের ঝুঁকি কমাতে পারে।