দলের ইমেজ রক্ষায় বিএনপিতে শুদ্ধি অভিযান, বহিষ্কার পাঁচ হাজারের বেশি

বিভিন্ন জায়গায় দলের নাম ব্যবহার করে চাঁদাবাজি, দখলবাজিসহ নানা অপকর্মে জড়িয়ে পড়া নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে বিএনপি। ‘হাইব্রিড’ এবং ‘নব্য বিএনপি’ পরিচয়ে চিহ্নিত এসব অপরাধে যুক্ত ব্যক্তিদের তালিকা তৈরি করে শুদ্ধি অভিযান শুরু করেছে দলটির হাইকমান্ড।
বিশ্বস্ত সূত্রগুলো জানায়, ইউনিয়ন থেকে জেলা পর্যায় পর্যন্ত প্রতিটি কমিটি পুনর্বিবেচনার আওতায় আনা হয়েছে। বিশেষভাবে তৃণমূলে যেসব নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে জনমনে নেতিবাচক ধারণা তৈরি হয়েছে, তাদের বিষয়ে দলীয় সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্নকারী কেউ যেন দলে না থাকে, সেই লক্ষ্যে চলছে কঠোর যাচাই-বাছাই।
বিএনপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি বলেন, “দল ও দেশের স্বার্থে বিএনপি সব ধরনের অপকর্মকারীর বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেবে। প্রয়োজনে তালিকা করে একে একে শুদ্ধি অভিযান চালানো হবে।”
তিনি আরও বলেন, “পাঁচ আগস্টের আগে ও পরে বিএনপির রাজনীতিতে গুণগত পরিবর্তন এসেছে। এখন যারা ইচ্ছাকৃতভাবে অপকর্মে জড়াবে, তাদের আর ছাড় দেওয়া হবে না।”
গত ১১ মাসে এ পর্যন্ত দলের অভ্যন্তরে অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে পাঁচ হাজারেরও বেশি নেতাকর্মীকে বহিষ্কার এবং প্রায় এক হাজারকে শোকজ করা হয়েছে। বিশেষভাবে ভোলা ও লালমনিরহাটের সাম্প্রতিক ঘটনায় দায়ীদের বিরুদ্ধে কড়া সাংগঠনিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, “অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। পাঁচ আগস্টের পর দলের প্রতিটি সভা-সমাবেশে আমরা বলে আসছি— আওয়ামী লীগের মতো অপকর্ম বিএনপিতে বরদাশত করা হবে না। ইতোমধ্যে যাদের বিরুদ্ধে প্রমাণ রয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”
তবে বিএনপির একটি অংশ দাবি করেছে, অনেক ক্ষেত্রে পরিকল্পিতভাবে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। তারা অভিযোগ করে, কিছু আওয়ামী লীগ ঘনিষ্ঠ ‘সাইলেন্ট গ্রুপ’ বিএনপির মধ্যে ঢুকে অপকর্ম করছে— যাদের শনাক্ত করে অপসারণ প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে।
দলীয় সূত্র বলছে, অপকর্মে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ পদক্ষেপের পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকেও ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ জানানো হয়েছে। বিএনপির অভ্যন্তরে শুদ্ধি অভিযান চলমান থাকবে এবং কোনো প্রভাবশালী নেতাকর্মীকেও ছাড় দেওয়া হবে না বলে হাইকমান্ড সাফ জানিয়ে দিয়েছে।