'নির্বাচনই এখন সংস্কারের একমাত্র পথ' — জোনায়েদ সাকি

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেছেন, “বিচার, সংস্কার ও নির্বাচন—এই তিনটিকেই আমাদের সমান গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করতে হবে। কোনো একটিকে অবহেলা করলে আমরা পথভ্রষ্ট হব।”
শুক্রবার (৮ আগস্ট) জাতীয় প্রেস ক্লাবে অগ্নিসেনা সোশ্যাল ফাউন্ডেশন আয়োজিত ‘দ্রুত বিচার সম্পন্ন, মৌলিক সংস্কার ও জাতীয় সংসদ নির্বাচন’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
অনেকেই শুধু নির্বাচনকেই গণতন্ত্র মনে করছেন উল্লেখ করে সাকি বলেন, “তারা বিচার ও সংস্কারকে উপেক্ষা করছেন, যা আমাদের ভুল পথে নিয়ে যেতে পারে। আবার কেউ কেউ বিচার ও সংস্কারকে নির্বাচনের মুখোমুখি দাঁড় করাচ্ছেন, সেটিও বিপজ্জনক খাদের দিকে ঠেলে দিতে পারে। এই জায়গাটা আমাদের বোঝা জরুরি।”
তিনি আরও বলেন, “সংস্কার আমাদের করতেই হবে। আমরা একটি জাতীয় সনদের প্রস্তুতির পথে আছি, যা অচিরেই ঘোষণা হতে পারে। কিন্তু এখানে মতানৈক্য, আপত্তি ও 'নোট অব ডিসেন্ট' আছে। এটাই বাস্তবতা। যারা বলছেন, জাতীয় সনদে সবকিছু না হলে আমরা নির্বাচনে যাব না—এটা কোনো রাজনৈতিক মীমাংসার পথ নয়।”
সাকি বলেন, “যারা আন্দোলনের মাধ্যমে নির্বাচন ঠেকাতে চান, সেটা তারা করতে পারেন। কিন্তু বর্তমান রাজনৈতিক বাস্তবতায় নির্বাচনকে ঠেকানোর কোনো অবকাশ নেই। বরং সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমেই সংস্কার সম্ভব। নির্বাচনই এখন সংস্কার বাস্তবায়নের গণতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণ পথ হয়ে উঠেছে।”
আলোচনা সভায় গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেন, “জুলাই সনদের খসড়ায় আমরা অনেক বিষয়ে একমত হয়েছি। তবে প্রকৃত অর্থে জনগণের প্রত্যাশা ও আন্দোলনের চেতনার পূর্ণ প্রতিফলন এতে নেই। বরং এতে কিছু মনগড়া ভাষ্য ও নির্দিষ্ট দলের ন্যারেটিভ তুলে ধরা হয়েছে, যেখানে গুরুত্বপূর্ণ অনেক বিষয় আড়াল করা হয়েছে।”
তিনি বলেন, “যে ঐক্য, সংহতি ও ভ্রাতৃত্বের মধ্য দিয়ে এই গণআন্দোলন গড়ে উঠেছিল, আমরা সেটিকে সম্মান করি। সেই চেতনা ধরে রেখেই একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে আমাদের সম্মিলিতভাবে এগিয়ে যেতে হবে।”
জাতীয় নির্বাচনের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে নুর বলেন, “অন্তর্বর্তী সরকার ইতোমধ্যেই সম্ভাব্য নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেছে। আমরা আশাবাদী, শিগগিরই একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, যা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের ক্ষেত্রে একটি মডেল হিসেবে বিবেচিত হবে। এতে জনগণের মতপ্রকাশের অধিকার সুরক্ষিত হবে এবং একটি কার্যকর ও দায়বদ্ধ সরকার গঠন সম্ভব হবে।”