হামলায় মাসুদ আজহারের ১০ স্বজনসহ ১৪ জন নিহত: জইশ-ই-মোহাম্মদের দাবি

পাকিস্তানের বাহাওয়ালপুরে ‘সুবহান আল্লাহ’ মসজিদে ভারতের সামরিক বাহিনীর হামলায় জইশ-ই-মোহাম্মদের (জেইএম) প্রধান মাওলানা মাসুদ আজহারের পরিবারের অন্তত ১০ সদস্য নিহত হয়েছেন। একইসঙ্গে তার আরও চার ঘনিষ্ঠ সহযোগীর প্রাণহানির কথা জানিয়েছে পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠীটি।
বুধবার (৭ মে) মধ্যরাতের এ হামলার বিষয়ে জেইএম-এর এক বিবৃতির বরাতে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, নিহতদের মধ্যে মাসুদ আজহারের বড় বোন, ভগ্নিপতি, ভাগ্নে, ভাগ্নের স্ত্রী, ভাগ্নী এবং পাঁচ সন্তান রয়েছে। এছাড়া তার তিনজন ঘনিষ্ঠ সহযোগীও নিহত হন।
জেইএম-এর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ওই হামলা চালানো হয়েছে বাহাওয়ালপুরের ‘সুবহান আল্লাহ’ মসজিদে। বিবৃতিতে মাসুদ আজহার বলেন, “স্বজনদের মৃত্যুতে আমার কোনো আফসোস নেই। বরং মনে হচ্ছে, আমিও তাদের সঙ্গে চলে যেতে পারতাম। তারা শহীদ হয়েছেন, এটি গৌরবের বিষয়।” তিনি জানাজায় অংশ নিতে সমর্থকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
মাসুদ আজহার জাতিসংঘ ঘোষিত সন্ত্রাসী। ভারতের অভিযোগ, ২০০১ সালের সংসদ হামলা, ২০০৮ সালের মুম্বাই হামলা, ২০১৬ সালের পাঠানকোট হামলা এবং ২০১৯ সালের পুলওয়ামা হামলার সঙ্গে সরাসরি জড়িত এই জঙ্গি নেতা।
৯টি স্থানে বিমান হামলা, উত্তপ্ত ভারত-পাকিস্তান সীমান্ত
জম্মু-কাশ্মিরের পেহেলগামে বন্দুকধারীদের হামলার পর প্রতিশোধ হিসেবে বুধবার মধ্যরাতে পাকিস্তান ও পাকিস্তান-অধিকৃত কাশ্মিরের অন্তত ৯টি স্থানে বিমান হামলা চালায় ভারতীয় সামরিক বাহিনী। মাত্র ২৫ মিনিটে ২৪টি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়, যাতে ভারতের পক্ষ থেকে ৭০ জনের মৃত্যুর দাবি করা হয়।তবে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এ হামলায় ২৬ জন নিহত হয়েছেন।
এছাড়া নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলওসি) বরাবর দু’পক্ষের সেনাদের মধ্যে ব্যাপক গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এতে ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরে ১০ জন নিহত এবং ৩০ জনের বেশি আহত হয়েছেন বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।
পাকিস্তান দাবি করেছে, তারা ভারতের পাঁচটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে। তবে ভারতের পক্ষ থেকে তিনটি বিমান দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে বলে স্বীকার করা হয়েছে। বিশ্বজুড়ে এই উত্তেজনাকে ঘিরে উদ্বেগ বাড়ছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় দুই দেশকে সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছে।