বাংলাদেশে সারাদেশে টাইফয়েড প্রতিরোধে বিনামূল্যে টিকাদান শুরু ১ সেপ্টেম্বর থেকে

বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো সারাদেশে টাইফয়েড প্রতিরোধে ব্যাপক টিকাদান কর্মসূচি শুরু হতে যাচ্ছে। আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে দেশের ৯ মাস থেকে ১৬ বছর বয়সী প্রায় ৫ কোটি শিশুকে এক ডোজ বিনামূল্যে টাইফয়েড টিকা দেওয়া হবে। এই টিকা দীর্ঘমেয়াদী সুরক্ষা নিশ্চিত করবে এবং জনস্বাস্থ্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
নিবন্ধন চলছে:
টিকাদানের জন্য আগ্রহীরা ১ আগস্ট থেকে সরকারিভাবে চালু করা ওয়েবসাইট vaxepi.gov.bd/registration/tcv থেকে নিবন্ধন করতে পারবেন। নিবন্ধনের জন্য প্রয়োজন ১৭ সংখ্যার জন্মনিবন্ধন নম্বর, তবে জন্মনিবন্ধন না থাকলে অভিভাবকের মোবাইল নম্বর দিয়েও নিবন্ধন করা যাবে।
টিকাদান কার্যক্রমের ধাপসমূহ:
ইপিআই কর্মসূচির ব্যবস্থাপক আবুল ফজল মো. শহাবউদ্দিন খান জানিয়েছেন, টিকাদান দুই ধাপে সম্পন্ন হবে। প্রথম ধাপে সেপ্টেম্বরের প্রথম ১০ কার্যদিবসে স্কুলভিত্তিক ক্যাম্পে শিশুরা টিকা পাবে। দ্বিতীয় ধাপে যারা প্রথম দফায় বাদ পড়বে, তাদের জন্য পরবর্তী ৮ দিনে ইপিআই কেন্দ্রে টিকা প্রদান করা হবে।
টিকা এবং এর কার্যকারিতা:
এক ডোজ ইনজেকশন টাইপের এই টিকা ৩ থেকে ৭ বছর পর্যন্ত সুরক্ষা দেয়। গাভি ভ্যাকসিন অ্যালায়েন্স (Gavi Vaccine Alliance) এই টিকা সরবরাহ করেছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, টাইফয়েড হল ব্যাকটেরিয়াজনিত একটি সংক্রামক রোগ, যা সাধারণত দূষিত খাবার বা পানি খাওয়ার মাধ্যমে ছড়ায়। এর লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে দীর্ঘস্থায়ী জ্বর, মাথাব্যথা, বমিভাব, ক্ষুধামান্দ্য, কোষ্ঠকাঠিন্য বা ডায়রিয়া। প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী প্রায় ৯০ লাখ মানুষ টাইফয়েডে আক্রান্ত হন এবং প্রায় ১ লাখ ১০ হাজার মানুষ মারা যান।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই টিকা নিরাপদ এবং বিশ্বজুড়ে বহু দেশে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। বাংলাদেশেও পাইলট প্রকল্পে এটি সফলভাবে প্রয়োগ করা হয়েছে। এর আগে এই টিকা শুধুমাত্র বেসরকারি খাতে অর্থ দিয়ে পাওয়া যেত, তবে এবার সরকারী উদ্যোগে বিনামূল্যে প্রদান করা হবে। বড় কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জোর দিয়ে বলছে, টাইফয়েড নিয়ন্ত্রণে শুধু টিকাই যথেষ্ট নয়, পাশাপাশি নিরাপদ পানি সরবরাহ, উন্নত স্যানিটেশন ব্যবস্থা, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নয়ন প্রয়োজন।