পুলিশ পরিচয়ে হামলা: কাঁঠালিয়ায় ৮জনকে বেঁধে ৬টি দোকান ঘর গুড়িয়ে লুটপাট

ঝালকাঠির কাঁঠালিয়া উপজেলার বটতলা বাজারে মুখোশধারী দুর্বৃত্তদের এক দল ভয়াবহ হামলা ও লুটপাট চালিয়েছে। তারা পুলিশ পরিচয়ে মোঃ হারুন অর রশিদের বসতঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে মুখোশধারী সন্ত্রাসীরা ঢুকে পরিবারের আট সদস্যকে বেঁধে মারধর করে এবং ঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গুঁড়িয়ে দেয়। ভুক্তভোগী পরিবারের দাবি, সন্ত্রাসীরা তাদের কাছ থেকে স্বর্ণালংকার, নগদ অর্থ ও গুরুত্বপূর্ণ দলিলপত্র লুট করে নিয়ে গেছে।
বৃহস্পতিবার (১ মে) ভোর রাতে কাঁঠালিয়া সদর ইউনিয়নের আনইলবুনিয়া গ্রামের বটতলা বাজারে এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী মোঃ হারুন অর রশিদের পরিবার জানায়, আনইলবুনিয়া গ্রামের আব্দুল মান্নানের ছেলে বিশিষ্ট ব্যবসায়ী নাসির খান সরোয়ারের ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসীরা রাত ৪টায় মুখোশপরে রামদা ও দেশীয় অস্ত্রসহ বাড়িতে ঢুকে হারুন, তার স্ত্রী রোজিনা বেগম, ছেলে মেহেদী, পুত্রবধূ লাকী, তিন কন্যাসহ মোট আটজনকে হাত-পা ও মুখ বেঁধে ভয়ভীতি দেখায় এবং শারীরিকভাবে নির্যাতন করে। লুট হওয়া মালামালের মধ্যে রয়েছে ৮ ভরি স্বর্ণালংকার, ৫টি মোবাইল ফোন, নগদ ৭৪ হাজার টাকা এবং জমিজমার গুরুত্বপূর্ণ দলিলপত্র। অপরদিকে বাহিরে থাকা অর্ধশত সন্ত্রাসী বাহিনী বসতঘর সংলগ্ন কাঁঠালিয়া-আমুয়া সড়কের বটতলা বাজারে আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাংচুর করে মাটির সাথে মিশিয়ে দেয়। এখানে মুদি-মনোহরী, কসমেটিক্স, মুরগির পোল্ট্রির দোকান, চা-দোকান, কনফেকশনারী সহ ৬টি দোকান ছিলো। এ সময় হামলাকারী দুর্বৃত্তরা দোকানে থাকা এক লক্ষ তিন হাজার নগদ টাকা, পাঁচ লক্ষ সাত হাজার টাকার মুদি মালামাল, চাল, চিনি, আটা, ময়দা, ডাল, চিড়া, কলা, সুপারি সহ চার লক্ষ টাকার বিভিন্ন মালামাল নিয়ে যায় সন্ত্রাসীরা।
ছেলে মেহেদী জানান- হামলা ও লুটপাটের সময় আমার আত্মীয় স্বজনরা খবর পেয়ে জাতীয় পরিসেবার সাহায্যের জন্য ৯৯৯ নম্বরে ফোন দিলে ঘটনাস্থান কাঁঠালিয়া থানা থেকে এক কিলোমিটার দুরে হলেও প্রায় আড়াই ঘণ্টা পরে দুইজন পুলিশ সদস্য ঘটনাস্থলে পৌঁছায় এবং পরিবারের সদস্যদের বাঁধন খুলে দেয়। ততক্ষনে তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সন্ত্রাসীরা মাটির সাথে মিশিয়ে দিয়ে মালামাল লুট করে নিয়ে যান।
ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেন, কাঁঠালিয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দিলেও পুলিশ এখনও পর্যন্ত কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। এমনকি অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দৃশ্যমান কোনো তদন্ত কার্যক্রম শুরু হয়নি। তবে সরোয়ারের লোকজন ইট, বালু ও কাঠ, টিন মওজুত করে রেখেছে, রাঁতের অন্ধকারে ঘর উঠানোর চেষ্টা চালাতে পারে। আমরা ২০০৭ সালে নানার কাছ থেকে ৬ শতাংশ জমি ক্রয় করে দীর্ঘ ২২ বছর ধরে এ জমিতে আমরা ঘর তুলে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছি।
স্থানীয় বাজার কমিটির সহ-সভাপতি ও ব্যবসায়ীরা জানান, হারুন অর রশিদ দীর্ঘদিন ধরে ওই স্থানে ব্যবসা করে আসছিলেন। অভিযোগের তীর আনইলবুনিয়া গ্রামের বাসিন্দা ও স্থানীয় ব্যবসায়ী নাসির খান সরোয়ারের ভাড়াটিয়া লোকজনের দিকে। তার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
কাঁঠালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মং চেনলা ঘটনার সত্যতা স্বীকার করলেও সংবাদমাধ্যমের সামনে কথা বলতে অস্বীকৃতি জানান।
স্থানীয়দের আশঙ্কা, হামলাকারীরা রাতের আঁধারে আবারও ঘর তোলার চেষ্টা করতে পারে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার দ্রুত প্রশাসনিক সহায়তা ও ন্যায়বিচার কামনা করেছে।