দুই দিনের অচলাবস্থার পর চট্টগ্রাম বন্দর পুরোদমে সচল

দুই দিনের কর্মবিরতি শেষে পুনরায় কাজে যোগ দিয়েছেন কাস্টমস ও কর বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। কর্মবিরতির কারণে সারাদেশের মতো চট্টগ্রামেও আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম প্রায় স্থবির হয়ে পড়ে। চট্টগ্রাম বন্দরে পণ্য খালাসে মারাত্মক জট সৃষ্টি হয়। সরকারের রাজস্ব আদায়েও বড় ধরনের প্রভাব পড়ে। তবে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কাজে যোগ দেওয়ায় পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়ে আসছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানান।
জানা যায়, রোববার (২৯ জুন) রাতেই সরকার একটি জরুরি নির্দেশনা জারি করে সব কাস্টমস ও কর বিভাগের কর্মকর্তাকে অবিলম্বে কাজে যোগ দেওয়ার নির্দেশ দেয়। নির্দেশনায় বলা হয়, তারা ‘অত্যাবশ্যক পরিষেবা’ এর অংশ, তাই কর্মবিরতি অব্যাহত রাখা সম্ভব নয়। সরকারের কঠোর অবস্থানের পর কর্মকর্তারা পুনরায় নিজ নিজ দফতরে ফিরে আসেন। এর ফলে চট্টগ্রাম বন্দরসহ দেশের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ স্থল ও নৌবন্দরে কার্যক্রম ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হতে শুরু করে।
জানতে চাইলে চট্টগ্রাম কাস্টমসের উপকমিশনার সাইদুল ইসলাম বলেন, 'রবিবার (২৯ জুন) রাত থেকে কাজ শুরু হয়েছে। সোমবার (৩০ জুন) হাউসও খুলে গেছে। আমদানি-রপ্তানিসহ সব ধরনের কার্যক্রম স্বাভাবিকভাবে চলছে।’
সরকারের এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়ে চট্টগ্রাম সিএন্ডএফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এস এম সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘কাস্টমস কর্মকর্তারা কাজে ফেরায় আমরা অনেকটাই চিন্তামুক্ত হয়েছি। বন্দরসহ চট্টগ্রামের ২১টি অফডকে কাজের গতি এসেছে। আশা করি, যে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছিল তা দুই-তিন দিনের মধ্যে নিরসন হবে। তবে এ বিষয়টি পুরোপুরি মীমাংসা করা প্রয়োজন, যেন পুনরায় দেশের রাজস্ব আহরণকারী খাত কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।’
তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছা জানিয়ে একাধিক কর্মকর্তা বলেন, আমরা শুধু সরকারের নির্দেশ মেনে আপাতত কর্মবিরতি প্রত্যাহার করেছি। তবে আমাদের ন্যায্য দাবি আদায়ের লক্ষ্যে আলোচনা ফলপ্রসূ না হলে ভবিষ্যতে আন্দোলন আবারও শুরু হতে পারে।
প্রসঙ্গত, এক অধ্যাদেশে সরকার জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ভেঙে পৃথক দুটি বিভাগ গঠনের উদ্যোগ নেয়। কর্মকর্তারা এই সিদ্ধান্তকে প্রশাসনিক কাঠামো ও কার্যকারিতার ওপর সরাসরি আঘাত বলে মনে করছেন। তাদের দাবি-এনবিআর বিলুপ্তির সিদ্ধান্ত বাতিল করতে হবে, এনবিআর চেয়ারম্যানকে পদত্যাগ করতে হবে এবং ট্যাক্স প্রশাসনে স্বচ্ছতা ও সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে।