আলমডাঙ্গা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রেহেনা পারভীনের বদলি, কৃষকদের মাঝে ক্ষোভ!

চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রেহেনা পারভীনকে বদলি করে নড়াইলের কালিয়া উপজেলায় স্থানান্তর করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট ২০২৫) কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে জারি করা প্রজ্ঞাপনে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তিনি আগামী ১ সেপ্টেম্বর নতুন কর্মস্থলে যোগ দেবেন।
রেহেনা পারভীন দায়িত্বকালীন সময়ে আলমডাঙ্গায় সাহসী উদ্যোগ, আন্তরিকতা ও কর্মনিষ্ঠার মাধ্যমে ব্যাপকভাবে আলোচনায় আসেন। বিশেষ করে সার সিন্ডিকেট ভেঙে কৃষকদের ন্যায্য মূল্যে সার পৌঁছে দেওয়ার পাশাপাশি অনিয়ম ও ভেজাল প্রতিরোধে একাধিক অভিযান পরিচালনা করেছেন।
কয়েকদিন আগে তিনি আলমডাঙ্গা পৌরসভার মাদ্রাসাপাড়ার নিমাই চন্দ্র বিশ্বাসের ছেলে অজয় কুমার বিশ্বাসের নওদাবন্ডবিল এলাকায় একাধিক গোডাউনে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ নকল সার, কীটনাশক ও অনুমোদনহীন কৃষিপণ্য জব্দ করেন। উদ্ধারকৃত পণ্যের মধ্যে ছিল—
১. রুটপ্লাস ৩,০০০ কেজি
২. পিসিআই “চমক” ১২ লিটারের ১২৫ কার্টুন
৩. পিসিআই রুট ৬,৮৪০ কেজি
৪. জিংক ১,৬৪০ কেজি
৫. ছিলেটেড জিংক ৬৬ কেজি
৬. ছলুবোর ১৭১ কেজি
এছাড়া আরও বিপুল পরিমাণ ভেজাল দ্রব্য জব্দ হয়।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের অভিযান
মঙ্গলবার সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১:৩০ পর্যন্ত মুদি দোকান, জ্বালানি গ্যাস ও সার-বীজ দোকান তদারকি করা হয়। এ সময় মেসার্স সিরাজ এন্টারপ্রাইজের মালিককে ৫০,০০০ টাকা এবং মেসার্স ফাতেমা স্টোরের মালিককে ৩০,০০০ টাকা জরিমানা করা হয়।
বড় দুটি অভিযানের পরপরই বদলির আদেশ আসায় স্থানীয় কৃষক ও সাধারণ মানুষের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
রেহেনা পারভীন বলেন, “আমি আলমডাঙ্গায় কৃষকদের স্বার্থে নিরলসভাবে কাজ করেছি। কিন্তু জনমনে প্রশ্ন এসেছে, দুটি বড় অভিযান পরিচালনার পরপরই বদলির আদেশ এল।”
স্থানীয় কৃষক সাইফুল ইসলাম জানান, “কৃষি অফিসার খুব আন্তরিক ছিলেন। তার থাকাকালীন সময়ে সারসংকট হয়নি, এবং যে কোনো সমস্যা নিয়ে গেলে সাহায্য পেয়েছি।”
অন্য কৃষক জমির আলী বলেন, “সৎ দায়িত্ববান কর্মকর্তা পেয়ে আমরা ব্যাপক সুবিধা পেয়েছি। তার বদলি শুনে আমি হতভাগ্য বোধ করছি।”
আলমডাঙ্গা উপজেলার নতুন কৃষি কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব নিতে যাচ্ছেন মোঃ মাসুদ হোসেন পলাশ, যিনি বর্তমানে জেলা বীজ প্রত্যয়ন অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) হিসেবে কর্মরত।