মাদক-চোরাকারবারীদের বিরুদ্ধে খবর করায় শেরপুরে সাংবাদিককে হত্যাচেষ্টা

মাদক চোরাকারবারীদের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশের জের ধরে শেরপুরের ঝিনাইগাতীতে দৈনিক ভোরের কাগজের শেরপুর প্রতিনিধি ও দৈনিক ইত্তেফাকের ঝিনাইগাতী উপজেলা সংবাদদাতা, সিনিয়র সাংবাদিক খোরশেদ আলমের ওপর হামলা হয়েছে। এতে গুরুতর আহত হয়ে জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন তিনি। গতকাল ১৫ আগস্ট শুক্রবার রাতে উপজেলার নলকুড়া ইউনিয়নের সন্ধ্যাকুড়া বাজারে এ হামলার ঘটনা ঘটে। এদিকে এ বর্বরোচিত হামলার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে দ্রুত সময়ের মধ্যে দোষীদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ।
আহত সাংবাদিক ও তার পরিবার সূত্রে জানা গেছে, পেশাগত দায়িত্ব পালন শেষে সাংবাদিক খোরশেদ আলম শুক্রবার রাত ১১টার দিকে বাড়ি ফিরছিলেন। ওইসময় আগে থেকেই ঝিনাইগাতী উপজেলার সন্ধ্যাকুড়া বাজারে উৎপেতে থাকা মাদক ও চোরাচালান চক্রের সন্ত্রাসীরা দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে তার উপর হামলা চালায়। তাকে বেধড়ক পেটানোর পাশাপাশি মাথায় আঘাত করা হলে তার কান, নাক ও চোখ দিয়ে রক্ত ঝরতে থাকে। পরে সন্ত্রাসীরা তাকে ফেলে চলে গেলে খবর পেয়ে স্থানীয়দের সহায়তায় ঝিনাইগাতী থানা পুলিশ সাংবাদিক খোরশেদ আলমকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। পরে অবস্থার অবনতি হওয়ায় শনিবার সকালে তাকে জেলা সদর হাসপাতালে রেফার করা হয়। বর্তমানে তিনি আশঙ্কাজনক অবস্থায় জেলা সদর হাসপাতালের পুরুষ ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
শনিবার দুপুরে সাংবাদিক খোরশেদ আলম জানান, মাদক চোরাকারবারী রাসেল চক্র এতটাই বেপরোয়া যে তাদের কোন কিছু বলতে সবাই ভয় পায়। এই সুযোগে তারা এলাকায় বেপরোয়াভাবে মাদক ব্যবসা করে আসছে। মাদক চোরাকারবারী চক্রের বিরুদ্ধে কয়েকটি খবর প্রকাশ করায় আগে থেকেই তাকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে আসছিল ওই চক্রের প্রধান রাসেল, মামুনসহ কয়েকজন। গতকাল তাকে প্রাণে মেরে ফেলতেই হামলা করেছে।
সাংবাদিক খোরশেদ আলমের ছোট ভাই হুমায়ূন খান তার ভাইয়ের ওর বর্বরোচিত সন্ত্রাসী হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় নিয়ে আসার দাবি জানান। একইসাথে এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান তিনি।
এদিকে শেরপুর প্রেসক্লাবের কার্যকরী সভাপতি রফিক মজিদ ও সাধারণ সম্পাদক মাসুদ হাসান বাদল সাংবাদি খোরশেদ আলমের ওপর হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে দ্রুত সময়ের মধ্যে হামলাকারীদের গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন। ঝিনাইগাতী উপজেলার সাংবাদিক জাহিদুল হক মনির এ হামলার নিন্দা জানিয়ে বলেন, আমরা খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছি, সাংবাদিক খোরশেদ আলমকে হত্যা চেষ্টার ঘটনায় মাদক ও চোরাকারবারীরা জড়িত। দ্রুত সময়ের মধ্যে ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারে আমরা প্রশাসনের কাছে দাবি জানাচ্ছি। অন্যথায় ঝিনাইগাতীর সাংবাদিকরা কঠোর কর্মসূচি হাতে নেবে।
এ ব্যাপারে ঝিনাইগাতী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আল-আমীন বলেন, খবর পেয়ে আমি নিজে ঘটনাস্থল থেকে আহত অবস্থায় সাংবাদিক খোরশেদ আলমকে হাসপাতালে ভর্তি করেছি। একইসাথে হামলার ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারে অভিযান চালানো হচ্ছে।