যশোরে বিএনপি নেতাসহ চাঁদাবাজি চক্রের ৪ জন গ্রেপ্তার!

যশোরের নওয়াপাড়ার বিতর্কিত বিএনপি নেতা আসাদুজ্জামান জনিকে ৪ কোটি টাকা চাঁদাবাজির অভিযোগে যৌথ বাহিনীর অভিযানে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। একজন ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে নির্মম নির্যাতন ও হত্যার হুমকি দিয়ে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। গত বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) ভোরে খুলনা সোনাডাঙ্গা এলাকার একটি হোটেল থেকে গোপন অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করা হয়। অভয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল আলিম এই আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ জানিয়েছে, জনি দীর্ঘদিন ধরে পলাতক ছিলেন। নওয়াপাড়ার এক ব্যবসায়ীর স্ত্রী আসমা খাতুন অভয়নগর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। অভিযোগে বলা হয়, তার স্বামীকে অপহরণ করে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করা হয়। এরপর তাকে বালুতে বুক পর্যন্ত পুঁতে রেখে হত্যার হুমকি দিয়ে কয়েক দফায় মোট ৪ কোটি টাকা চাঁদা আদায় করা হয়। এই ঘটনায় আসাদুজ্জামান জনিসহ আরও কয়েকজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছিল। পরে চলতি বছরের ৩ আগস্ট তাদের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করা হয়।
ওসি আব্দুল আলিম জানান, পলাতক জনি খুলনায় আত্মগোপন করে ছিলেন। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে যৌথ বাহিনীর একটি দল গত বৃহস্পতিবার ভোরে সেখানে অভিযান চালায় এবং তাকে আটক করতে সক্ষম হয়। বর্তমানে তাকে অভয়নগর থানায় রাখা হয়েছে এবং ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। পুলিশ তার বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া অন্যান্য মাদক ও চাঁদাবাজির অভিযোগগুলোও খতিয়ে দেখছে।
তিনি আরও বলেন, ৪ কোটি টাকা চাঁদাবাজির মামলার ভিত্তিতেই জনিকে আটক করা হয়েছে এবং আইন অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নওয়াপাড়ায় ৪ কোটি টাকা চাঁদাবাজির মামলায় এখন পর্যন্ত মোট চারজনকে আটক করা হয়েছে। আটককৃতরা হলেন, মামলার প্রধান আসামি নওয়াপাড়া পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক (পদ স্থগিত) আসাদুজ্জামান জনি, জনির বাবা মো. কামরুজ্জামান মজুমদার, জনির সহযোগী এবং অভয়নগর উপজেলার চলিশিয়া ইউনিয়ন পরিষদের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য তুহিন শেখ, অপর একজনের নাম প্রকাশ করা হয়নি।
মামলায় মোট ৬ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছিল। ব্যবসায়ী শাহনেওয়াজ কবীরের স্ত্রী আসমা খাতুন বাদী হয়ে গত ৩ আগস্ট অভয়নগর থানায় মামলাটি দায়ের করেন।
এদিকে গত ১২ আগস্ট, যশোর প্রেসক্লাবে তার বোন মানি জারমিন ইলোরা একটি সংবাদ সম্মেলন করেছিলেন। লিখিত বক্তব্যে তিনি অভিযোগ করেন, তার ভাইয়ের বিরুদ্ধে একটি কুচক্রী মহল রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন তথ্য প্রচার করছে। তিনি আরও দাবি করেন, ব্যবসায়ী শাহনেওয়াজ কবীর টিপু একজন চিহ্নিত প্রতারক এবং তিনি জনি ও তার পরিবারের সুনাম নষ্ট করার জন্য মিথ্যা নাটক সাজিয়েছেন।
উল্লেখ্য, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে ২০২৪ সালের ২১ নভেম্বর জনিকে নওয়াপাড়া পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদকের পদ থেকে স্থগিত করা হয়েছিল।