ময়মনসিংহে শিশুসহ ৪ মরদেহ উদ্ধার, নদীতে নিখোঁজ যুবক!

ময়মনসিংহে শিশুসহ ৪ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। একই সাথে শীতলক্ষা নদীতে নৌকা থেকে পড়ে এক যুবক নিখোঁজ হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত জেলার সদরে পুকুরে পড়ে শিশু, নান্দাইলে ফাঁসিতে ঝুঁলে নারী, ত্রিশালে গার্মেন্টস কর্মীর ক্ষত-বিক্ষত মরদেহ, ভালুকায় তাল গাছ থেকে শ্রমিকের মরদেহ ও গফরগাঁও নৌকা থেকে পড়ে শীতলক্ষা নদীতে এক যুবক নিখোঁজ রয়েছে।
সদর
ময়মনসিংহ নগরীতে বৃষ্টির সময় পুকুরে গোসল করতে নেমে আবু হুরায়রা (১১) নামে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
নিহত আবু হুরায়রা নগরীর ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের কোনাচিপাড়া গ্রামের শফিকুল ইসলামের ছেলে। সে স্থানীয় একটি মাদ্রাসায় লেখাপড়া করত।
স্থানীয় সুত্র জানায়, দুপুরের দিকে ওই এলাকার ৫ থেকে ৬ জন শিশু পুকুরে গোসল করতে নামে। গোসল করার একপর্যায়ে সকল শিশু উঠে আসলেও আবু হুরায়রা পানিতে তলিয়ে যাচ্ছিল। পরে অপর এক শিশু তাকে টেনে তুলতে ব্যর্থ হয়ে উপরে উঠে আসে। পরে আবু হুরায়রা পুকুরের পানিতে তলিয়ো যায়। স্থানীয়রা ফাঁয়ার সার্ভিসে খবর দিলে এক ঘন্টার চেষ্টায় শিশুকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে কোতোয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শিবিরুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।
ত্রিশাল
জেলার ত্রিশালে রতন চন্দ্র দাস (২৬) নামে এক পোশাক শ্রমিকের ক্ষত-বিক্ষত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
গত বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) সকালে রতন চন্দ্রের মরদেহ উপজেলার কালীর বাজার রেললাইনের পাশ থেকে উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।
নিহত রতন চন্দ্র সাহা (২৬) উপজেলার নলছিড়ি গ্রামের মতিলাল চন্দ্র সাহার ছেলে। তিনি গাজীপুরে একটি পোশাক কারখানায় কাজ করতেন।
ত্রিশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনসুর আহাম্মদ বলেন, স্থানীয়দের খবর পেয়ে সকালে কালীর বাজার রেলক্রসিং সংলগ্ন ধানখেত থেকে রতন চন্দ্র সাহার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ট্রেন থেকে পড়লে মানুষ যেমন আঘাত পায়, ঠিক তেমনি তাঁর একটি হাত ভাঙা এবং কপালের চামড়া উঠে গেছে। তার পকেটে থাকা আইডি দেখে জানা গেছে, তিনি গাজীপুরের একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করেন।
ভালুকা
জেলার ভালুকায় তালগাছের মরাডাল কাটতে গিয়ে ফিরোজ মিয়া (৫৫)নামে এক শ্রমিকের গাছেই মৃত্যু হয়েছে। নিহত ফিরোজ উপজেলার পাড়াগাঁও গ্রামের মৃত গুঞ্জন আলী সরকারের ছেলে।
গত বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) সকালে কাচিনা গ্রামের জায়নাল আবেদীন ওরফে বুলবুল তার পুকুর পাড়ের তাল গাছের ডাল পরিষ্কার করার জন্য দৈনিক চুক্তিতে ফিরোজ মিয়াকে কাজে লাগান। বেলা সাড়ে ১২টার সময় ফিরোজ মিয়া তালগাছে উঠে গাছের সাথে রশি দিয়ে নিজেকে বেধে ডাল কেটে পরিষ্কার শুরু করেন। হঠাৎ করে তাল গাছের কাটা ডালের একটি ঝোঁপ ফিরোজের মাথায় পড়ে। এতে তিনি গুরুতর আহত হয়ে গাছের উপরেই ঝুলতে থাকেন। খবর পেয়ে ভালুকা ফায়ার সার্ভিসের দুইটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আধা ঘন্টান চেষ্টায় আনুমানিক ২০ ফুট উপরে তালগাছ থেকে মৃত অবস্থায় ফিরোজ মিয়ার মরদেহ উদ্ধার করেন।
ভালুকা ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার আতিকুর রহমান বলেন, খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনা স্থলে গিয়ে ফিরোজ মিয়ার মরদেহটি উদ্ধার করি। পরে ভালুকা মডেল থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
ভালুকা মডেল থানা উপপরিদর্শক (এসআই) ওয়াসিম জানান, নিহতের মাথায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে রয়েছে এবং তার মাজার হাড় ভেঙ্গে গেছে। ধারণা করা হচ্ছে তাল গাছের ডালের আঘাতে তিনি মারা যেতে পারেন।
নান্দাইল
জেলার নান্দাইলে বাঁশ বাগান থেকে ফাঁসিতে ঝুলন্ত অবস্থায় আসমা খাতুন (৫৫) নামের এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
গত বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) সকাল ৯ টায় খারুয়া ইউনিয়নের হালিউড়া উত্তরপাড়া থেকে উদ্ধার করে। নিহত আসমা খাতুন ওই গ্রামের সাইদুল ইসলামের স্ত্রী।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, ওই গ্রামের সাইফুল ইসলামের স্ত্রী আসমা খাতুন দীর্ঘদিন ধরে মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন। গত বুধবার রাতে কোন এক সময় পরিবারের অজান্তে বাড়ির পাশে বাঁশ বাগানে নিজের ওড়না দিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্নহত্যা করে। সকালে বাড়ির লোকজন বাঁশ বাগানে আসমা খাতুনকে ঝুলন্ত দেখে থানা পুলিশকে খবর দেয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে বৃহস্পতিবার সকালে মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
নান্দাইল মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার জালাল উদ্দিন মাহমুদ বলেন, খবর পেয়ে মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় আইগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
গফরগাঁও
জেলার গফরগাঁও উপজেলায় নৌকা থেকে পড়ে সেলিম (৪২) নামে এক যুবক নিখোঁজ হয়েছে। সিখোঁজ সেলিম ত্রিলাল উপজেলার মনোহর চিকনা গ্রামের রিয়া উদ্দিনের ছেলে।
পুলিশ ও স্থানীয় সুত্র জানায়, জেলার ভালুকা থেকে মাজার জিয়ারতের উদ্দেশ্যে নদীপথে ফরিদপুরে কেল্লা শাহ-র মাজার যাওয়ার সময় গফরগাঁওয়ের শীতলক্ষ্যা নদীতে ট্রলার থেকে পড়ে গিয়ে দুইজন নিখোঁজ হয়। পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় এক জনকে জীবিত উদ্ধার করা হলেও এখনো নিখোঁজ রয়েছে সেলিম। খবর পেয়ে গাজীপুর ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল সেলিমকে খোঁজাখোঁজি করেও কোন সন্ধান মেলেনি। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত সেলিমকে খোঁজে বের করতে ফায়ার সার্ভিস অভিযান পরিচালনা করছেন।
পাগলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ ফেরদৌস আলম বলেন, শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত শীতলক্ষা নদীতে নিঁখোজ যুবকের সন্ধ্যান এখনো মিলেনি। ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল মরদেহ উদ্ধারের চেষ্টা করছেন।