‘দুষ্কৃতকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বললেও প্রশাসন নির্বিকার’ — অভিযোগ রিজভীর

দলীয় নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দুষ্কর্ম ও অপতৎপরতা রুখতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তা চাওয়া হলেও প্রশাসন কোনো সহযোগিতা করছে না বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
মঙ্গলবার (৮ জুলাই) নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ তোলেন তিনি।
রিজভী বলেন, “আমরা লক্ষ্য করেছি, দলের পক্ষ থেকে বারবার দুষ্কৃতকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণে প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তারা নির্বিকার থেকেছে। এই প্রশাসনিক স্থবিরতার কারণেই ‘মব কালচার’-এর মতো সামাজিক ব্যাধির প্রসার ঘটছে।”
‘প্রযুক্তি ব্যবহার করে অপপ্রচার, উদ্দেশ্য নির্বাচন পেছানো’
রিজভী দাবি করেন, “স্বার্থান্বেষী মহল অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে প্রযুক্তি ব্যবহার করে বিএনপির নামে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা অপপ্রচার চালাচ্ছে। এগুলোর মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে সামাজিক অস্থিরতা তৈরি, জনগণকে বিভ্রান্ত করা এবং সম্ভাব্য নির্বাচনী প্রক্রিয়া বিলম্বিত করা।”
তিনি বলেন, “শেখ হাসিনার তথাকথিত উন্নয়নের বয়ানের মতোই এখন নির্বাচন পেছানো নিয়ে নানা ধরনের গল্প বলা হচ্ছে।”
সংবাদ সম্মেলনে রিজভী বলেন, “দলের নাম ভাঙিয়ে কেউ অপকর্মে জড়িত হলে তাকে কোনোভাবেই ছাড় দেওয়া হচ্ছে না। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকজন নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে—কারও পদ স্থগিত করা হয়েছে, কারও বিরুদ্ধে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে, কেউ বহিষ্কৃত হয়েছেন।”
তবে গণমাধ্যমে এ ধরনের ব্যবস্থা নেওয়ার খবর খুব একটা প্রকাশ না পাওয়ায় ‘বিষয়গুলো আড়ালে থেকে যাচ্ছে’ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
বিএনপি নেতা আরও বলেন, “বর্তমানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতাসীন হলেও পুলিশ প্রশাসন খুব একটা সক্রিয় হয়নি। বরং কোথাও কোথাও দেখা যাচ্ছে, উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে কেউ কেউ কলকাঠি নাড়ছেন। এভাবে চলতে থাকলে সমাজের নৈতিক কাঠামো, সভ্যতা ও শৃঙ্খলা চরম হুমকির মুখে পড়বে।”
রিজভীর ভাষ্য, “আওয়ামী আমলের কালো টাকা এবং তাদের দোসরদের আন্ডারগ্রাউন্ড তৎপরতার কারণেই এখন সমাজে নানা অপসংস্কৃতি মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। মব কালচার ও সংঘবদ্ধ দুষ্কর্মের যে প্রবণতা তৈরি হয়েছে, সেটি ক্ষমতাসীনদের ছায়া ছাড়া সম্ভব নয়।”
সংবাদ সম্মেলনের একপর্যায়ে রিজভী বলেন, “বিএনপি জন্মলগ্ন থেকেই গণতন্ত্র ও সুশাসনের পক্ষে আইনি ও প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো গঠনের পক্ষে লড়াই করে এসেছে। আমরা কোনোভাবেই বিশৃঙ্খলা সমর্থন করি না বরং শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠায় আইনগত ও সাংগঠনিকভাবে কাজ করে যাচ্ছি।”