বহুল আলোচিত চোখ উপড়ে ফেলা মামলায় সব আসামির অব্যাহতি, বিক্ষোভ ও মানববন্ধন

শরীয়তপুরে ৩২ বছর আগে সংঘটিত হৃদয়বিদারক ‘চোখ উপড়ে ফেলা’ মামলায় সম্প্রতি আদালতের দেওয়া রায়ে সকল আসামির অব্যাহতির ঘটনায় চরম ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন ভুক্তভোগী পরিবার ও এলাকাবাসী। রায়ের প্রতিবাদে রোববার (১২ মে) সকালে ভেদরগঞ্জ উপজেলার মোল্লার হাট বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এক মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।
১৯৯২ সালে মোল্লার হাট এলাকায় সংঘটিত ওই নৃশংস ঘটনায় ছয়জন নিরীহ ব্যক্তিকে নির্মমভাবে নির্যাতন করে তাঁদের চোখ উপড়ে ফেলা হয়। দীর্ঘ সময় ধরে চলা এই মামলায় ভুক্তভোগী পরিবার বিচার পাওয়ার আশায় দিন গুনছিলেন। কিন্তু সম্প্রতি আদালতের রায়ে সকল আসামি খালাস পাওয়ায় এলাকায় ন্যায়বিচার নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
মানববন্ধনে অংশ নেন বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ, শিক্ষার্থী, মানবাধিকারকর্মী ও সামাজিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা। বক্তারা বলেন, “এই রায় ন্যায়ের চরম পরাজয়। এটি কেবল একটি পরিবারের ওপর হওয়া জুলুম নয়, এটি গোটা সমাজের ওপর আঘাত। এমন রায় দৃষ্টান্ত স্থাপন করে যে, ক্ষমতাবানরা অপরাধ করেও পার পেয়ে যেতে পারে।”
ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্য জালাল উদ্দীন জুলফিকার কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, “আমাদের জীবন আজও থমকে আছে সেই ভয়াল দিনের ঘটনায়। তিন দশক ধরে ন্যায়ের অপেক্ষায় ছিলাম, আজ তা হারিয়ে গেল আদালতের এক রায়ে। এটা কি আমাদের প্রাপ্য ছিল?”
স্থানীয় তরুণ মঈনুল ইসলাম অনিম বলেন, “এটি শুধু ব্যক্তিগত কোনো ক্ষতি নয়, এটি বিচারহীনতার একটি ভয়ঙ্কর দৃষ্টান্ত। দোষীরা শাস্তি না পেলে ভবিষ্যতে এমন অপরাধ আরও বাড়বে।”
মানববন্ধনে বক্তারা মামলাটি পূণরায় তদন্ত ও উচ্চ আদালতে দ্রুত আপিল করার দাবি জানান। তাঁরা বলেন, “প্রভাবশালীরা যেন বিচারকে প্রভাবিত করতে না পারে, সে বিষয়ে সরকারকে নজর দিতে হবে। এই ঘটনায় প্রকৃত দোষীদের বিচারের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।”
ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন শেষে আয়োজকরা জানান, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়া হবে এবং প্রয়োজনে বৃহত্তর আন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে।