শরীয়তপুরের ডিসি আশরাফ উদ্দিন তদন্তের মুখে, গঠন করা হলো কমিটি

শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ আশরাফ উদ্দিনের বিরুদ্ধে 'নারী কেলেঙ্কারির' অভিযোগ ওঠার প্রেক্ষিতে তাঁকে ওএসডি (বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) করা হয়েছে এবং ঘটনা তদন্তে গঠন করা হয়েছে তিন সদস্যের একটি কমিটি। রোববার (২২ জুন) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার শরফ উদ্দিন আহমদ চৌধুরীকে। কমিটির সদস্য হিসেবে থাকছেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব (শৃঙ্খলা-২ অধিশাখা) ডা. মো. নূরুল হক এবং মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের একজন প্রতিনিধি—যিনি যুগ্ম সচিব পদমর্যাদার নিচে নন—তিনিও কমিটিতে সদস্য সচিব হিসেবে থাকবেন।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, "শরীয়তপুরের প্রাক্তন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আশরাফ উদ্দিন শৃঙ্খলা পরিপন্থী আচরণ করেছেন কি না—তা যাচাই করতে এ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি সুষ্ঠু তদন্ত শেষে সুস্পষ্ট মতামতসহ একটি প্রতিবেদন দাখিল করবেন।"
এর আগে গতকাল শনিবার ডিসি আশরাফ উদ্দিনকে ওএসডি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এই নির্দেশের মাধ্যমে তাকে বর্তমান কর্মস্থল থেকে প্রত্যাহার করে রাজধানীর কর্মচারী প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে (বিসিএস অ্যাডমিন একাডেমি) সংযুক্ত করা হয়।
বৃহস্পতিবার গভীর রাতে একটি নারী সংশ্লিষ্ট ভিডিও ও ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে, যেখানে জেলা প্রশাসক আশরাফ উদ্দিনকে দেখা যায় এক নারীর সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থানে। এরপর থেকেই বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনিক মহলে ব্যাপক অস্বস্তি ছড়িয়ে পড়ে।
জানা গেছে, ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর থেকেই আশরাফ উদ্দিন কর্মস্থলে অনুপস্থিত ছিলেন। শুক্রবার সকাল থেকে শরীয়তপুরে তাকে পাওয়া যায়নি। বিষয়টি আরও গুরুতর আকার ধারণ করলে শনিবার তার ওএসডি আদেশ আসে।
শরীয়তপুর জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের একাংশ জানিয়েছেন, ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ার পর জেলার প্রশাসন অচলাবস্থার মুখে পড়ে। অনেক কর্মকর্তাই বিষয়টি নিয়ে বিব্রত ও চাপে আছেন।
আশরাফ উদ্দিন প্রশাসন ক্যাডারের একজন কর্মকর্তা হিসেবে বিভিন্ন সময় জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে দায়িত্ব পালন করেছেন। সম্প্রতি তিনি শরীয়তপুর জেলার ডিসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। তবে নারী কেলেঙ্কারির এই ভিডিও প্রকাশের পর তার বিরুদ্ধে শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ এনে সরকার পদক্ষেপ নেয়।
সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে এ ধরনের ঘটনা বরদাশতযোগ্য নয় বলেই মনে করছেন প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট মহল। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ও বিষয়টি দ্রুত তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছে।