মিটার চুরি করে মোবাইল নম্বর রেখে গেলো চোর

সচরাচর বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম যেমন তার, মিটার, ট্রান্সমিটার সহ মূল্যবান যন্ত্রাংশ চুরির ঘটনা শোনা যায়। তবে এবার শরীয়তপুরে ঘটেছে এক ভিন্ন কাহিনী।একই রাতে শরীয়তপুরের ডামুড্যা ও গোসাইরহাটে অন্তত ১৩ টি বৈদ্যুতিক মিটার চুরির ঘটনা ঘটেছে। তবে চোর আবার মিটারের জায়গায় পলিথিনে মুড়িয়ে রেখে গেছে যোগাযোগের জন্য মোবাইল নাম্বার।
সোমবার (২১ এপ্রিল) ভোর রাতে উপজেলার শিধলকুড়া ইউনিয়নের শিধলকুড়া বাসস্ট্যান্ড, চর পাথালিয়া এলাকায়সহ গোসাইরহাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পল্লী বিদ্যুৎ অফিস বলছে নাম্বার দিয়ে গিয়ে মিটার চুরির ঘটনা বাংলাদেশে প্রথম নয়।এখানে চোরের রেখে যাওয়া নাম্বারে কল দিয়ে চোরের দাবি করা অর্থ দিলে ফেরত পাওয়া যায় চুরি যাওয়া মিটার।
স্থানীয়, ভুক্তভোগী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বৈদ্যুতিক মিটার চোর চক্রের কিছু সংঘবদ্ধ সদস্য রয়েছে যারা বিভিন্ন জায়গার বৈদ্যুতিক মিটার খুলে নিয়ে লুকিয়ে রাখে। পরবর্তীতে তারা খুলে নেয়া মিটারের স্থানে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের নাম্বার লিখে রেখে যান। তাদের চাহিদা অনুযায়ী টাকা দিলে মিটারের সন্ধান মেলে। এমন একটি চক্রের সদস্যরা রোববার দিনগত রাতে শিধলকুড়া এলাকার সজল মাদবর, আলামিন আকন, চর পাথালিয়া এলাকার শাহাদাৎ মীর, কাজল বরুসহ পাশের গোসাইরহাট উপজেলার অন্তত ১৩ জন গ্রাহকের বৈদ্যুতিক মিটার খুলে নিয়ে যায়। এসময় চক্রটি সেখানে পলিথিনে মুড়িয়ে একটি মোবাইল নাম্বার রেখে যান।
ভুক্তভোগী সজল মাদবর বলেন, সোমবার সকালে আমার প্রতিষ্ঠানে এসে দেখি বিদ্যুতের মিটার নেই। সেখানে একটি মোবাইল নাম্বার রাখা আছে। বিষয়টি আমি বিদ্যুৎ অফিসের কর্মকর্তাকে জানিয়েছি।
মাহবুব আলম জয় নামের আরেক ভুক্তভোগী বলেন, এমন চক্রের কথা আগে শুনেছি। আজ চুরির এলাকায় এমন ঘটনা লক্ষ্য করলাম। চক্রটি একটি মোবাইল নাম্বার রেখে গিয়েছে। তাদের টাকা পাঠালে মিটার ফেরত পাওয়া যাবে। আমরা এ ব্যাপারে পুলিশের সাহায্য কামনা করছি।
ডামুড্যা পল্লী বিদ্যুৎ জোনাল অফিসের ডিজিএম সুবীর কুমার দত্ত বলেন, এই চক্রটি বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় রয়েছে।এর আগে আমি রাজশাহী এবং নওগাতেও এমন ঘটনার সম্মুখীন হয়েছিলাম।তখন আসলে প্রশাসনের সহায়তায় বিকাশ নাম্বার যে এনআইডি দিয়ে খোলা তার পর্যন্ত পুলিশ পৌঁছালেও শেষে গিয়ে জানা যায় এটি ব্যবহার করছে অজ্ঞাত কেউ।আসলে এই চক্রের কাজ মিটার খুলে নিয়ে আশেপাশে লুকিয়ে রেখে মোবাইল নাম্বার রেখে যায় টাকার জন্য। পরে ওই নাম্বারে কল দিলে টাকা দিলে বলে দেয় মিটার কোথায় লুকানো আছে।এমন একটি চক্র ডামুড্যা এলাকার তিনটি মিটারসহ পাশের গোসাইরহাটেও বেশ কিছু মিটার চুরি করেছে এমন অভিযোগ পেয়েছি। আমাদের পক্ষ থেকে পুলিশকে অবগত করা হয়েছে। আর ভুক্তভোগীদেরকেও থানায় অভিযোগ করতে বলেছি।
এ বিষয়ে ডামুড্যা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুর রহমান মানিক বলেন, বেশকিছু বৈদ্যুতিক মিটার চুরির খবর পেয়েছি। ভুক্তভোগীদের থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করার কথা বলা হয়েছে। আমরা চক্রটির সদস্যদের আইনের আওতায় আনার ব্যাপারে পদক্ষেপ গ্রহণ করবো।