নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণকারীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলার অভিযোগ

জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে বাধাদান ও হামলার অভিযোগে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক - শিক্ষার্থীসহ ২১০ জনের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী ও ছাত্রদল নেতার করা মামলা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও হয়রানিমূলক বলে অভিযোগ উঠেছে ।
মামলায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সক্রিয় তিন শিক্ষার্থীর নাম থাকায় মিথ্যা মামলা দায়েরের অভিযোগ করেছেন তারা। তাদের মধ্যে একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ছিলেন বলে জানা গেছে।
মঙ্গলবার (৬ মে) বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে মামলাটি রাজনৈতিক উদ্দ্যেশপ্রণোদিত ও মিথ্যা দাবি করে তা প্রত্যাহার করে নিতে প্রতিবাদ করেন ভুক্তভোগী তিন শিক্ষার্থী।
তিন শিক্ষার্থী হলেন, থিয়েটার এন্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী লিমন আহমেদ, আইন ও বিচার বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শরিফুল ইসলাম সংগ্রাম এবং সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মো. আজিজুল ইসলাম যিনি বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সমন্বয়কের ভূমিকা পালন করেছেন।
উক্ত সংবাদ সম্মেলনে শরিফুল ইসলাম সংগ্রাম বলেন, “আমরা রাজপথে ছিলাম, গুলি-সন্ত্রাসের মুখে থেকেছি, আর আজ সেই আন্দোলনের যোদ্ধাদের আসামি বানানো হচ্ছে। এরচেয়ে লজ্জার আর কী হতে পারে?”
তিনি আরও বলেন, “আগে আমি ছাত্রলীগ করেছি ঠিক আছে, কিন্তু ২০২৪ এর ১৮ জুলাই আন্দোলনের সময় আমি পদত্যাগ করেছিলাম। সেটার প্রমাণও দেখাতে পারবো। একটা ফ্যাসিস্ট সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন তাদের বিরুদ্ধে যাওয়া অনেক কঠিন ছিলো। তবুও আমি তাদের বিরুদ্ধে সক্রিয় আন্দোলনে ছিলাম। এখন শুধু দেখতে চাই, যে উদ্দ্যেশ্যে আন্দোলন করেছিলাম সেটা আমাদের সত্যিই আইনের সুশাসন দিচ্ছে কিনা।”
এ সময় মো. আজিজুল ইসলাম বলেন, “যিনি মামলা করেছেন তাকে ব্যক্তিগতভাবে কখনো দেখিনি, চিনিও। উনিও বোধহয় আমাকে চেনেন না, তাই মামলার নথিতে আমার নাম ভুল দিয়েছেন। ২০২৪ সালের ৪ আগস্টে ক্যাম্পাসে বাঁধাপ্রাপ্ত হয়েও আমরা ফ্যাসিস্টের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছি।
মিজানুর রহমান স্যারও ছিলেন। সেসবের প্রমাণ মিডিয়ায় রয়েছে। পরদিন ৫ আগস্ট আমরা ঢাকায় গিয়েও আন্দোলনে অংশগ্রহণ করি, যেখানে আমাদের অনেক সহযোদ্ধা আহত হয়।”
লিমন আহমেদ বলেন, “আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ এনে মামলা করা হয়েছে তা নিতান্তই ভিত্তিহীন। যার কোনো প্রমাণ নেই। যদি প্রমাণ থাকে তা জনসম্মুখে উপস্থাপন করা হোক।”
এসব অভিযোগের ভিত্তিতে মামলার বাদী মোঃ আশিকুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে কারা ছিল, ছাত্রলীগ করেও আন্দোলন কারা করেছে, নির্দিষ্টভাবে বোঝার উপায় নেই। যারা দাবি করছে নিরপরাধ, তাদের অন্য কারও সঙ্গে লেনদেন বা সুপারিশের দরকার নেই। অযথা হয়রানি করার উদ্দেশ্য আমার নেই। তারা আমার সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করলেই হবে। তাদের নাম মামলা থেকে বাদ দেওয়া হবে। সঠিক তদন্তের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনেরও সহযোগিতা চাই।