বন্ধুকে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসাতে গিয়ে পুলিশের জালে পড়ে জেলে ২ বন্ধু

প্রেমের বিষয় পরিবারে ফাঁস করায় ১০হাজার টাকার ইয়াবা কিনে বন্ধুকে ফাঁসাতে গিয়ে নিজেই ফেঁসে গেলেন বেচারা দুই বন্ধু। সন্দেহভাজন পুলিশের তদন্তে ধরা পড়ে মোটর সাইকেলের সিটের নিচে ইয়াবা রেখে ফাঁসানোর গল্প। শেষে পরিকল্পনাকারী দুই বন্ধুকে জেলে পাঠালো পুলিশ। ঘটনাটি ঘটেছে কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী থানায়। ঘটনাটি এলাকা জুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।
আটক আসামীরা হলেন, মো: জুয়েল হক।ফুলবাড়ী উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ অনন্তপুর গ্রামের মোহাম্মদ আলীর ছেলে। অন্যজন মনির হোসেন। নাগেশ্বরী উপজেলার এগারো মাথা সাতকুড়ারপাড় এলাকার আছকের আলীর ছেলে। এদের মধ্যে জুয়েল হক মূল পরিকল্পনাকারী। মনির পুলিশকে খবর দেয়।
নাগেশ্বরী থানার এসআই অপূর্ব কুমার বলেন, শনিবার রাতে মনির হোসেন নামে এক ব্যক্তি থানা মুঠোফোনে জানান, নেওয়াশী ইউনিয়নের এগারো মাথা বাজারে এক ব্যক্তির মোটর সাইকেলের সিটের নিচে ইয়াবা রয়েছে। পরে অভিযান চালিয়ে বাজার থেকে মোটর সাইকেলটি আটক করে সিট ও যন্ত্রাংশ খুলে ৬৭টি ইয়াবা ট্যাবলেট পাওয়া যায়। মোটর সাইকেলের মালিক মিলন মিয়াকে জিজ্ঞসাবাদ করা হয়। মিলন ফুলবাড়ী উপজেলার কাশীপুর ইউনিয়নের ঠাটারীটারি গ্রামের মোজাফ্ফর হোসেনের ছেলে।
তিনি জানান, ঘটনাটি নিয়ে পুলিশের সন্দেহ হয়। জিজ্ঞাসাবাদে গাড়ীর মালিক মিলন ইয়াবার বিষয়ে কিছুই জানেনা বলেও জানান। ধারণা করা হয়, ওই ব্যক্তিকে ফাঁসাতে সিটের নিচে ইয়াবা রাখা হতে পারে। পরে বাজার থেকে সোর্স মনিরকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে জানায়, জুয়েলের কথায় পুলিশকে জানান তিনি। পরে রোববার ভোরে বাড়ী থেকে জুয়েলকে আটক করে থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদে ফাঁসানোর পরিকল্পনার কথা স্বীকার করে জুয়েল।
জুয়েলের স্বীকারোক্তির বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, প্রেমসহ অন্যান্য ব্যক্তিগত বিষয় জুয়েলের পরিবারে জানায় তার বন্ধু মিলন। এ নিয়ে চার মাগে তাদের মনোমালিন্য হলে আর এক বন্ধু মনিরসহ মিলনকে ফাঁসানোর পরিকল্পনা করে জুয়েল। মাদক দিয়ে ফাঁসাতে ১০ হাজার টাকায় ইয়াবা ট্যাবলেট ক্রয় করে। ঘটনার দু’দিন আগে মিলনের মোটর সাইকেল নিয়ে বাড়িতে যায় জুয়েল। বাড়িতে সিটের নিচে ইয়াবা ট্যাবলেট রেখে গাড়ী ফেরত দেয়। পরে পুলিশকে সোর্স হিসেবে জানায় মনির।
এ ঘটনায় থানার নাগেশ্বরী থানার এসআই অলকান্ত রায় বাদী হয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই প্রভাত চন্দ্র রায় বলেন, আসামীদের আদালতের মাধ্যমে জেলে পাঠানো হয়েছে।
নাগেশ্বরী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রেজাউল করিম বলেন, সোর্সের মাধ্যমে খবর পেয়ে মোটর সাইকেলসহ ইয়াবা উদ্ধারের পর ঘটনাটি নিয়ে আমাদের সন্দেহ জাগে। কৌশলে সোর্সদের জিজ্ঞাবাদ করে দেখা যায় ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে বিরোধের জেরে পরিকল্পনা করে মোটর সাইকেলে ইয়াবা রাখা হয়েছে। পরে পরিকল্পনাকারী ও সোর্সকে আটক করলে তারা বিষয়টি স্বীকার করে। তাদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা হয়েছে।