ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে এক মাসে ২১ দুর্ঘটনা, নিহত ৬

ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ে পরিণত হয়েছে দুর্ঘটনার হটস্পটে। মুন্সীগঞ্জ জেলার শ্রীনগর, সিরাজদিখান ও লৌহজং উপজেলার অংশে গত এক মাসে এই গুরুত্বপূর্ণ সড়কে অন্তত ২১টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে প্রাণ হারিয়েছেন ৬জন, আহত হয়েছেন অন্তত ৩৬ জন। স্থানীয়দের অভিযোগ, এক্সপ্রেসওয়ের সার্ভিস লেনে অবাধে চলাচল করছে ইট-বালুবাহী ভারী ট্রাক ও ট্রলি। অনেক ক্ষেত্রে এগুলো চালাচ্ছেন অনভিজ্ঞ তরুণ চালকেরা, যাদের অনেকেরই বৈধ কাগজপত্র নেই।
সর্বশেষ দুর্ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার সকালে, শ্রীনগর উপজেলার ওমপাড়া এলাকায়। সকাল পৌণে ৮টার দিকে মাওয়াগামী একটি ইটবোঝাই ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের রেলিং ও সেতুর ওয়ালের সঙ্গে সজোরে ধাক্কা খায়। ট্রাকটি দুমড়ে-মুচড়ে যায় এবং চালক আহত হন। শ্রীনগর ফায়ার সার্ভিস স্টেশন অফিসার দেওয়ান আজাদ হোসেন জানান, স্থানীয়দের সহায়তায় আহত চালককে দ্রুত উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়। তিনি বলেন, আমরা ঘটনাস্থলে এসে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি, আহত চালকের নাম রিয়াজুল (৩০)। তিনি সিরাজদিখান উপজেলার কুচিয়ামোড়া এলাকার বাসিন্দা।
স্থানীয়দের মতে, এক্সপ্রেসওয়ের সার্ভিস লেনে নিয়ন্ত্রণহীনভাবে চলাচল করছে বিভিন্ন পণ্যবাহী ট্রাক, ড্রাম ট্রাক ও ট্রলি। বিশেষ করে ইট, বালু ও নির্মাণ সামগ্রী বোঝাই এসব ভারী যানবাহন নিয়ম মানছে না। অনেক গাড়ির নম্বর প্লেট পর্যন্ত নেই, ফলে দুর্ঘটনার পর চালক ও মালিকদের শনাক্ত করাও কঠিন হয়ে পড়ে। বয়রাগাদি ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. সেন্টু মিয়া জানান,ঢাকামুখী এই ব্যস্ত সড়কে ভারী যান চলাচলে নিয়মশৃঙ্খলা নিশ্চিত না করলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হতে পারে। নিয়মিত টহল, সিসিটিভি নজরদারি এবং অবৈধ ও নম্বরবিহীন যানবাহনের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার আহবান জানান। হাসাড়া এলাকার বাসিন্দা ইকবাল হোসেন জানান, এক্সপ্রেসওয়েতে গতি বাড়ার পাশাপাশি বেড়েছে অনিয়ন্ত্রিত ও অসচেতন চালনার হার। প্রশাসন এখনই কঠোর না হলে এ সড়ক যেন মৃত্যুফাঁদে পরিণত না হয়, এমন আশঙ্কা করছেন তিনি। এ বিষয়ে হাসাড়া হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল কাদের জিলানী বলেন, ঘটনাস্থলে গিয়ে আমরা আহত কাউকে পাইনি। তবে ট্রাকটি হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। তিনি আরও জানান, বালুবাহী ট্রাক ও ট্রলিগুলো আমাদের চোখ ফাঁকি দিয়ে স্থানীয় সংযোগ সড়ক ব্যবহার করে এক্সপ্রেসওয়ের সার্ভিস লেনে উঠছে। এসব যানবাহনের কারণে সড়কে ঝুঁকি বাড়ছে। আমরা বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখছি এবং শিগগিরই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।