ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে শোভা ছড়াচ্ছে বাহারি রঙের ফুল

গ্রীষ্মের শুরুতে চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের মহাসড়কে বাহারি ফুলের চোখ ধাঁধানো সৌন্দর্য যাত্রীদের মন কাড়ছে। এ যেন নানা রকম বৃক্ষ আর ফুলের রাজ্য। গাছে গাছে থোকায় থোকায় সোনালু, কৃষ্ণচূড়া, জারুল আর রাধাচূড়া ফুল। তার দু’পাশে বয়ে গেছে দেশের লাইফলাইন খ্যাত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক।
মিরসরাই উপজেলার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া মহাসড়কে দেখা মেলে এমন ফুলের সৌন্দর্য। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক এখন আর শুধু একটা পথ নয়; এটা যেন ফুলের বাগান, যেখানে প্রতিদিন প্রকৃতি নিজেই অভ্যর্থনা জানায় হাজারো মানুষকে।
খৈয়াছড়ার বাসিন্দা আব্দুল আলিম বলেন, মহাসড়কের সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য সরকার সোনালু, জারুল, কৃষ্ণচূড়াসহ বিভিন্ন প্রজাতির ফুল গাছ লাগিয়েছে। এগুলো দেখে খুবই ভালো লাগে।
নিজামপুর সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী আরমান হোসেন নাইম বলেন, এখন ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক দিয়ে যাতায়াত করতে মনে হয় পর্যটন স্পট দিয়ে যাচ্ছি। সড়কের মাঝে ফুলের বাগান দেখতে খুবই ভালো লাগে। বিশেষ করে বর্ষাকালে দেখতে অপরূপ লাগে। বিশেষ করে এমন সুন্দর একটি সিদ্ধান্তের জন্য বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাই।
মহাসড়কে চলাচলকারী মো. তাহসিন বলেন, আমি প্রতিদিন মিরসরাই থেকে চট্টগ্রাম শহরে যাতায়াত করি। মহাসড়কের মাঝে মাঝে ফুলের বাগান দেখতে খুব ভালো লাগে। এমন সুন্দর ফুলের বাগানে দিন দিন মহাসড়কের আকর্ষণ বাড়ছে।
চট্টগ্রাম সিটি গেট থেকে শুরু করে মহাসড়কের দাউদকান্দি পর্যন্ত ১৪৩ কিলোমিটার সড়কে রয়েছে ১৩ প্রজাতির প্রায় এক লাখ গাছের বাহারি ফুলের বাগান। কিছু জায়গায় আছে বিভিন্ন প্রজাতির ফলগাছও।
২০১৭ সাল থেকে সড়কদ্বীপে নিয়মিত দেখভালের মধ্য দিয়ে এই পরিকল্পিত বাগান তৈরি করা হয়েছে। হরেক রকমের ফুলগাছ ছাড়াও জলপাই, অর্জুন, কাঁঠাল, মেহগনি, শিশু, আকাশমণি, চালতা, নিম, একাশিয়া, হরীতকীসহ বিভিন্ন প্রজাতির ফল ও ঔষধি গাছও রয়েছে এ মহাসড়কের ডিভাইডারে। এ বাগানের পরিচর্যায় ৩৫ জন শ্রমিক নিয়মিত কাজ করেন। বর্ষার ভরা মৌসুমে বৃষ্টিস্নানে সিক্ত তরুলতায় যেন প্রাণ ফিরেছে। এরই মাঝে বনজ জারুল বৃক্ষে গ্রীষ্মে ফোটা অসম্ভব সুন্দর বেগুনি রঙের মায়াভরা থোকা থোকা জারুল ফুল তপ্ত দুপুরে মগডালে বসে আকাশের সাথে যেন গড়েছে ভাললাগার সখ্যতা। হলুদ রঙের পরাগবিশিষ্ট মায়াবী জারুল ফুলের ছোঁয়ায় প্রকৃতি সেজেছে তার আপন মহিমায়। পিচঢালা কালো মহাসড়কের মাঝে সবুজে মন মাতানো তপ্ত এক উদাসী দুপুরেও জারুল ফুলের আভায় সড়কে লেগেছে নৈস্বর্গিক ছোঁয়া।
পরিবেশবিদ অধ্যাপক ড.ইদ্রিস আলী বলেন, ‘মহাসড়কের এই ফুল-ফলের বাগান আমারও দৃষ্টি কেড়েছে। এটি পরিবেশের জন্য যেমন, তেমনি ভ্রমণের জন্যও খুব ভালো। প্রতিটি মহাসড়কে এভাবে পরিকল্পিত বাগান করে আমরা পরিবেশকে বাঁচাতে পারি।’
সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ মোসলেহ্ উদ্দীন চৌধুরী বলেন, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক যখন ফোর লেইন করা হয়, তখন সড়কের সৌন্দর্য বাড়াতে নানা রকম ফুলের গাছ লাগানো হয়েছে। আমাদের মোবাইল টিম এগুলোর নিয়মিত পরিচর্যা করে থাকে।