গ্যাস সংকটে উৎপাদন বন্ধ সিইউএফএল সার কারখানা

গ্যাস সংকটে চট্টগ্রামের আনোয়ারার রাষ্ট্রায়ত্ত চিটাগাং ইউরিয়া ফার্টিলাইজার লিমিটেডে (সিইউএফএল) সার উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেছে। শুক্রবার (১১ এপ্রিল) সকাল সাতটার দিকে কারখানায় উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায় বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
এর আগে যান্ত্রিক ক্রটির (রিঅ্যাক্টরের সমস্যা) কারণে গত ৩ জানুয়ারি থেকে ২৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ইউরিয়া সার উৎপাদন বন্ধ ছিল কারখানাটিতে। দেড় মাস পর আবারও কারখানায় উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেল।
পূর্ণমাত্রায় উৎপাদনের জন্য সম্পূর্ণ গ্যাসনির্ভর এ কারখানায় দৈনিক ৪৮ থেকে ৫২ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের প্রয়োজন। গ্যাস–সংকট ও যান্ত্রিক নানা সমস্যা থাকায় গত অর্থবছর কারখানাটিতে প্রায় আড়াই লাখ মেট্রিক টন ইউরিয়া সার উৎপাদিত হয়। কৃষিনির্ভর বাংলাদেশে ইউরিয়া সারের চাহিদা বছরে প্রায় ২৬ লাখ মেট্রিক টন। তার মধ্যে সিইউএফএলসহ বিসিআইসির অন্যান্য কারখানা প্রায় ১০ লাখ মেট্রিক টন ইউরিয়া উৎপাদন করে। অবশিষ্ট ১৬ লাখ মেট্রিক টন ইউরিয়া উচ্চমূল্যে আমদানি করতে হয়।
সিইউএফএল সূত্র জানায়, গত দুই বছর কখনো যান্ত্রিক ক্রটিতে, কখনো গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকায় দীর্ঘ সময় ধরে বন্ধ ছিল সিইউএফএল। ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে শুধু পাঁচ দিন চালু ছিল এ কারখানা। গত বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে কারখানার উৎপাদন বন্ধ হয়ে পড়ার পর ১৩ অক্টোবর সিইউএফএল চালু হয়। এ বছরের ৩ জানুয়ারি আবারও যান্ত্রিক ক্রটি দেখা দিলে দীর্ঘ সময় লাগে কারখানাটি চালু করতে। সর্বশেষ যাবতীয় স্টার্ট-আপ (কারখানা চালু প্রক্রিয়া) শেষে ২৬ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাত আড়াইটার সময় কারখানা চালু হয়।
১৯৮৭ সালের ২৯ অক্টোবর জাপানের কারিগরি সহায়তায় কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পাড়ে আনোয়ারা উপজেলার রাঙ্গাদিয়ায় সার কারখানাটি প্রতিষ্ঠা করে সরকার। কারখানা চালু হওয়ার সময় দৈনিক ১ হাজার ৭শ মেট্রিক টন এবং বার্ষিক ৫ লাখ ৬১ হাজার মেট্রিক টন ইউরিয়া উৎপাদনক্ষমতা থাকলেও বর্তমানে দৈনিক ১ হাজার ২শ মেট্রিক টন ইউরিয়া উৎপাদন করতে সক্ষম হচ্ছে। পাশাপাশি বার্ষিক ৩ লাখ ১০ মেট্রিক টন অ্যামোনিয়া উৎপাদন করতে পারে সিইউএফএল।
সিইউএফএলের ব্যবস্থাপক পরিচালক মো. মিজানুর রহমান বলেন, গ্যাসের চাপ কম থাকায় কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন গ্যাস সরবরাহ প্রত্যাহার করে নেয় এবং এরপরই উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। কতক্ষণ নাগাদ উৎপাদন কার্যক্রম পুনরায় চালু হবে তা এখনও পর্যন্ত বলা যাচ্ছে না।