মালেশিয়ার প্রলোভনে মিয়ানমারে আটক : ২২ মাস পর মায়ের বুকে ফিরলো ছেলে

অধিকাংশ কিশোর, হাতেগোনা দুই-একজন যুবক। ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যায় মালেশিয়ার উদ্দেশ্যে। মিয়ানমার যেতেই আটক হয় সেই দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে। প্রায় ২২ মাস পর তাদের উদ্ধার করে দেশে আনা হয়। চট্টগ্রাম বন্দরে নৌবাহিনী জেলা প্রশাসনের হাতে তুলে দেয়। আর জেলা প্রশাসন উদ্ধার হওয়া কিশোর-যুবকদের জিম্মায় দেয় তাদের পরিবারের হাতে।
মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। সকালে নৌবাহিনীর জাহাজে চট্টগ্রাম বন্দরে পৌছায় ২০ বাংলাদেশি কিশোর-যুবক।
আর সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজের সামনে বাসে থেকে একে একে নামেন তাঁরা। ছেলে-ভাইকে এত মাস পর কাছে পেয়ে দৌঁড়ে যান স্বজনেরা। কেউ কেউ ভেঙ্গে পড়েন কান্নায়। এরপর সম্মেলন কক্ষে শুরু হয় স্ব স্ব নাগরিকদের কাছে জিম্মাদারকরণ।
জানা গেছে, অসাধু দালালরা এসব অপ্রাপ্তবয়স্ক কিশোরদের মালয়েশিয়ায় পাচারের চেষ্টা করেছিল। পথিমধ্যে মিয়ানমারের আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে তারা আটক হয়। মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে এবং তাদের বাংলাদেশি নাগরিকত্ব যাচাইয়ের পর, বাংলাদেশ দূতাবাস তাদের প্রত্যাবাসনের ব্যবস্থা গ্রহণ করে।
অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তারা সকলেই কক্সবাজার জেলার টেকনাফ, উখিয়া অঞ্চলের বাসিন্দা। পরিবারকে না জানিয়ে এই কিশোরেরা মালয়েশিয়া পাড়ি দিচ্ছিলো। প্রায় এক মাস পর পরিবার জানতে পারে তারা আটক হয়েছেন। এক বছর আগে রাষ্ট্রীয়ভাবে তাঁদের ফিরিয়ে আনতে কাগজপত্র জমা দেয় পরিবার।
জিম্মাদার করণ অনুষ্ঠানে চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. কামরুজ্জামান বলেন, তাদের তথ্য যাচাই বাছাই করে তাদের বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। আমরা তাদের পরিবারের উপস্থিতি নিশ্চিত করে তাদের পরিবারের জিম্মায় তাদের হস্তান্তর করা হয়েছে।
এর আগে গত রবিবার মিয়ানমারের ইয়াঙ্গুন শহরের এমআইটিটি বন্দর থেকে ২০ জন বাংলাদেশি নাগরিক বাংলাদেশ নৌ বাহিনীর জাহাজ বিএনএস সমুদ্র অভিযানে বাংলাদেশের উদ্দেশ্যে রওনা করে। আজ সকালে জাহাজটি চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছায়।