জমি নিয়ে বিরোধ, প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে নিজের মেয়েকে হত্যা

প্রতিবেশীর সাথে ৩২ বিঘা জমি নিয়ে বিরোধ। সেই বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে নিজের মেয়েকে কুপিয়ে হত্যা করেছে পিতা। তাতে সহায়তা করে মাও চাচী। বাাড়ির পাশে মরদেহ ফেলে রেখে ৯৯৯ কল করা হয় পুলিশকে। কিন্তু রক্ষা হলোনা বাবা নামের ঘাতকের। বাবা-মা ও চাচীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আদালতে মেয়েকে হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন গ্রেপ্তারকৃতরা। এই ঘটনা ঘটেছে কুড়িগ্রাম সদরের হলোখানা ইউনিয়নের কাজীপাড়ায়।
পুলিশ জানায়, রবিবার ৯৯৯ নম্বরে সংবাদ পেয়ে কাজীপাড়ায় ভুট্টা ক্ষেতের পাশ থেকে জান্নাতি খাতুন নামে নবম শ্রেণির ছাত্রীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় নিহতের চাচা খলিল হক বাদী হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করে। এরপর ঘটনার তদন্তে নামে পুলিশ।
তদন্তের একপর্যায়ে পুলিশ জানতে পারে জান্নাতীর বাবা জাহিদুল ইসলামের সাথে প্রতিবেশি মজিবর মিয়াদের ৩২ বিঘা জমি নিয়ে বিরোধ দীর্ঘদিনের। প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে পূর্বপরিকল্পনা মতো শনিবার শেষ রাতে স্ত্রী ও ভাইয়ের স্ত্রীসহ জান্নাতি খাতুনকে রড দিয়ে আঘাত করে ও দা দিয়ে কুপিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে বাড়ির পাশে ভুট্টা ক্ষেতের পাশে ফাঁকা জমিতে ফেলে রাখে। ঘটনা বিশ্বাসযোগ্য করতে বাড়ির আঙিনায় থাকা খড়ের পালায় আগুন ধরিয়ে দেয় তারা। সকালে পুলিশকে খবর দেয়া হয়।
তদন্তের শুরুতে পুলিশ ঘটনার ক্লু পেয়ে যায় এবং চার ঘন্টার মধ্যে আসল ঘটনা বের করে ফেলে। ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী ও ঘাতক নিহত তরুণীর পিতা জাহিদুল ইসলাম, মা মোর্শেদা বেগম ও চাচী শাহিনুর বেগমকে গ্রেপ্তার করে। ঘাতক পিতাকে সাথে নিয়ে বাড়ির পাশে বাঁশ ঝারের মাটির নিচ থেকে হত্যায় ব্যবহৃত লোহার রড ও দা উদ্ধার করে। সোমবার সন্ধায় তিন আসামীকে আদালতে তোলা হলে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন তারা।
কুড়িগ্রাম জেলা পুলিশের মিডিয়া অফিসার ও ওসি ডিবি বজলার রহমান বলেন, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সদর থানার ওসি মোঃ হাবিবুল্লাহ ও ডিবি পুলিশের একটি টিম অল্প সময়ের মধ্যে ঘটনার মুল পরিকল্পনাকারীদের গ্রেপ্তার করতে পেরেছে। মামলার তদন্ত কাজ এখনও চলমান রয়েছে। আরও কেউ জড়িত থাকলে তাদেরও আইনের আওতায় আনা হবে।