আ'লীগ নেতার নিমন্ত্রণে যুবদল নেতার বাসায় জামায়াত নেতার মধ্যাহ্ন ভোজ

পটুয়াখালীর বাউফলে এক আওয়ামীলীগ নেতার আমন্ত্রনে যুবদল নেতার বাসায় দুপুরের খাবার খেয়ে বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন এক জামায়াত নেতা। মধ্যাহ্ন ভোজ ঘিরে বাউফলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ সর্ব মহলে চলছে তুমুল বিতর্ক।
জামায়াতের ওই নেতা হলেন, বাংলাদেশ ছাত্র শিবিরের সাবেক সভাপতি, জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ।
জানা গেছে, বাউফল পৌর আওয়ামীলীগের ৭নং ওয়ার্ডের সভাপতি ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য মো. নুরুল হক মিয়ার আমন্ত্রনে শুক্রবার (০২ এপ্রিল) দুপুরে স্থানীয় শামনুর সিকদার জামে মসজিদে জুমার নামাজ পড়েন জামায়াত নেতা মাসুদ। নামাজের পর ওই আওয়ামীলীগ নেতার বাড়িতেই দুপুরের খাবার আয়োজন করা হয়। কিন্তু সেখানে স্থানীয় একাধিক গনমাধ্যকর্মী উপস্থিত থাকায় হঠাৎ করেই ভেন্যু পরিবর্তন করে ওই আওয়ামীলীগ নেতার ভাইয়ের ছেলে যুবদল নেতা আনোয়ার হোসেনের বাসায় ভেন্যু ঠিক করা হয়। পরে ওই আওয়ামীলীগ নেতার বাড়িতে রান্না করা পোলাও, গরুর মাংস, মুরগীর মাংস, পোমা মাছ, ডাল, করলা ভাজি ও ভাত নিয়ে আসা হয় যুবদল নেতার বাসায়। এরপর জামায়াত নেতা ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ তাঁর সাথে আসা ১৫ থেকে ২০জন সফর সঙ্গী নিয়ে ওই যুবদল নেতার বাসায় দুপুরের খাবার খান। ওই মধ্যাহ্ন ভোজনে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার কথিত পুত্র সুধীর নন্দীকেও দেখা গেছে।
এ ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে রুমেন সিকদার নামে এক কনটেন্ট ক্রিয়েটর তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
এই ঘটনায় জাতীয় নাগরিক কমিটির বাউফল উপজেলা শাখার অন্যতম সদস্য মু. জাকির হোসেন বলেন, যদি এই ঘটনা সত্য হয়ে থাকে তাহলে বিষয়টি জুলাই আন্দোলনের স্পিরিট বিরোধী কাজ।
এ বিষয়ে যুবদল নেতা আনোয়ার হোসেন বলেন, আমার বাসায় কোনো দাওয়াত ছিলোনা, মসজিদে দাওয়াত ছিলো। নুরুল হক মিয়ার বাসায় রান্না করা হয়েছে, বৃষ্টি নামছে এসময় নুরুল হক মিয়ার জামাই অলিউল এসে আমার বাসায় বসে তাদেরকে খাওয়ানোর জন্য অনুরোধ জানান, এরবেশি কিছু জানা নেই।
এ বিষয়ে আওয়ামীলীগ নেতা মো. নুরুল হক মিয়া জামায়াত নেতা ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদকে আমন্ত্রন জানানোর বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, একজন মেহমান আসছেন তাকে উপস্থিত মতে আপ্যায়ন করা হয়েছে, আমার বাসায় খায় নাই, আনোয়ারের বাসায় খেয়েছে, কতজন খেয়েছে জানতে চাইলে বলেন, আমি এ বিষয়ে কিছু বলতে পারবোনা, আমি এক কোনায় বসে ছিলাম। রান্নার বাবুর্চীরা জানিয়েছেন আগে থেকেই নাকি প্রস্তুতি ছিলো এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন ওরা আগে জানে কিভাবে, আজ সকালে,,,, আমি কিছু জানি না।
এ বিষয়ে বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহ-দপ্তর সম্পাদক মো. মুনির হোসেন বলেন, এই ভোজন জুলাইয়ের শহীদদের রক্তের সাথে প্রতারনা এবং এই ঘটনার সাথে ওই যুবদল নেতার সম্পৃক্ততা পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
নিমন্ত্রণের বিষয়ে জানতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, আমাকে একজন বাউফলবাসী দাওয়াত দিয়েছেন আমি সেখানে গিয়েছি, সে আওয়ামীলীগ নাকি অন্য কোনো দলের সেটা আমার জানা নেই, এক ভাইয়ের দাওয়াতে গিয়েছি। বিভেদ তৈরী করে সমাজের ভালো করা যায়না, মিলেমিশেই ভালো সমাজ তৈরী করতে হবে।