পারমাণবিক হামলার ৮০ বছর: হিরোশিমায় নীরব শ্রদ্ধা, বিশ্বে শান্তির আহ্বান

আজ ৬ আগস্ট, ইতিহাসের অন্যতম ভয়াবহ মানবসৃষ্ট দুর্যোগ—জাপানের হিরোশিমায় পারমাণবিক বোমা হামলার ৮০ বছর পূর্তি। ১৯৪৫ সালের এই দিনে যুক্তরাষ্ট্রের বিমানবাহিনী 'লিটল বয়' নামের একটি পারমাণবিক বোমা হিরোশিমা শহরে নিক্ষেপ করে, যাতে মুহূর্তেই মৃত্যু হয় হাজার হাজার মানুষের।
এই বিভীষিকাময় দিনের স্মরণে আজ (বুধবার) সকালে হিরোশিমার পিস মেমোরিয়াল পার্কে এক মিনিটের নীরবতা পালন করা হয়। এতে অংশ নেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবা, হিরোশিমার মেয়র কাজুমি মাতসুই, এবং বিশ্বের প্রায় ১২০টি দেশ ও অঞ্চলের প্রতিনিধি।
হিরোশিমার মেয়র কাজুমি মাতসুই বলেন, “জাপানই একমাত্র দেশ যেটি যুদ্ধের সময় পারমাণবিক হামলার শিকার হয়েছে। আমরা সেই জাতি, যারা প্রকৃত এবং স্থায়ী শান্তির জন্য গভীরভাবে আকাঙ্ক্ষা করি।”
প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবা তার বক্তব্যে বলেন, “বিশ্বকে পারমাণবিক অস্ত্রমুক্ত করার ক্ষেত্রে নেতৃত্ব দেওয়া জাপানের নৈতিক দায়িত্ব।” তিনি বলেন, “হিরোশিমায় পারমাণবিক হামলায় প্রায় ১ লাখ ৪০ হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছিলেন। তাৎক্ষণিক বিস্ফোরণ, জ্বলন্ত আগুন ও বিকিরণের প্রভাবে এই প্রাণহানির ঘটনা ঘটে।”
এবারের অনুষ্ঠানে প্রথমবারের মতো উপস্থিত ছিল তাইওয়ান ও ফিলিস্তিন। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতও। তবে রাশিয়া ও চীন অনুষ্ঠানে অংশ নেয়নি।
১৯৪৫ সালের ৬ আগস্ট যুক্তরাষ্ট্রের বি-২৯ বোমারু বিমান 'এনোলা গে' হিরোশিমায় 'লিটল বয়' নামের পারমাণবিক বোমা ফেলে। এরপর ৯ আগস্ট নাগাসাকিতে ফেলা হয় আরেকটি বোমা ‘ফ্যাট ম্যান’। দুই হামলায় আনুমানিক ২ লাখ মানুষ নিহত হন। এই দুটি বোমা বিস্ফোরণই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অবসান ত্বরান্বিত করে, তবে রেখে যায় ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ের দৃষ্টান্ত।
৮০ বছর পরও হিরোশিমা স্মরণ করিয়ে দেয়—পারমাণবিক অস্ত্রের বিপদ কতটা ভয়াল হতে পারে। শান্তির পক্ষে দাঁড়ানোর ডাক এখন আগের চেয়েও জোরালো।