ঝলসে যাওয়া শরীর নিয়ে হাসপাতালে কাতরাচ্ছে শিশু, পল্লী চিকিৎসকের ভুল চিকিৎসার খেসারত

রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ণ ইউনিটের বিছানায় কাতরাচ্ছে শিশু নুরজাহান। পুড়ে গেছে তার শরীরর বেশির ভাগ অংশ। স্থানীয় পল্লী চিকিৎসকের দেয়া ওষুধে তার এ পরিণতি বলছেন পরিবার। শিশু নুরজাহান কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার কেদার ইউনিয়নের টেপারকুটি গ্রামের ইউনুস আলীর মেয়ে।
রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকও বলছেন, রোগীর শারীরিক অবস্থা দেখে ধারণা করা হচ্ছে ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় এমনটি হয়েছে।
শিশুটির পিতা ইউনুস আলী জানান, গত ২৯ জুলাই নুরজাহানের জ্বর হলে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় পাশের সবেদের মোড়ের পল্লী চিকিৎসক আলমগীর হোসেনের ওষুধের দোকান ও চেম্বারে। পল্লী চিকিৎসক আলমগীর নুরজাহানকে দেখে তিন প্রকার ওষুধ দেয়। ওষুধ নিয়ে বাড়িতে এসে ওই ওষুধ খাওয়ানোর পর তার শরীরে ছোট ছোট ফোঁসকা পড়তে শুরু করে। একদিনে তার শরীর পুড়ে যাওয়ার মতো কালো হয়ে গেলে আবারও তাকে ওই চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান। কিন্তু রোগীকে দেখে পুনরায় চিকিৎসা দিতে টালবাহনা করেন আলমগীর। এর একদিন পরে নুরজাহানের শরীর জুড়ে ক্ষত হতে শুরু করে। বুকে ও পাজোরে চামড়া উঠে আগুনে পোড়ার মতো হয়ে যায়। পরে ১ আগষ্ট শিশু নুরজাহানকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে বার্ণ ইউনিটে ভর্তি করা হয়।
ইউনুস আলী বলেন, ওষুধ খাওয়ানোর পর থেকে তার শরীরে ফোসকা উঠে। আস্তে আস্তে ঘা হয়। ডা. আলমগীরের সাথে বারবার যোগাযোগ করলে সে এড়িয়ে যায়। কথায় বলেনা। ছোট্ট মেয়েটা আমার ব্যাথায় কাতরাচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নিজেকে পল্লী চিকিৎসক দাবী করা আলমগীর হোসেনের বাড়ি উপজেলার বামনডাঙ্গা এলাকায়। সবেদের মোড় বাজারে আল মদিনা নামে ওষুধের ফার্মেসিতে রোগী দেখেন। স্থানীয়রা জানান, সব ধরণের রোগের চিকিৎসা দেন আলমগীর। প্রেসক্রিপশন প্যাডে ডাক্তার পদবীও ব্যবহার করেন। জেনারেল প্রাক্টিশনার ও সরকারী প্রশিক্ষকণ প্রাপ্ত চিকিৎসক বলেও নিজেকে দাবী করেন আলমগীর।
আলমগীর বলেন, আমি তাকে কয়েকটি জ্বরের ওষুধ দিয়েছি মাত্র। আমি ভুল চিকিৎসা দেইনি। ওই ওষুধের মাত্রাতিরিক্ত পরিমাণে ওষুধ সেবন করার তার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় এমনটা হয়েছে হয়তো।
এ প্রসঙ্গে কুড়িগ্রাম সিভিল সার্জণ ডা. স্বপন কুমার বলেন, রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ওষুধের পার্শপ্রতিক্রিয়া নির্ণয়ের মেডিকেল টিম রয়েছে। তারা প্রতিবেদন দিলে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।