মজুত থাকলেও মিলার সিন্ডিকেটের কারসাজিতে বাড়ছে চালের দাম

সরকারি গুদামে চালের মজুত যথেষ্ট থাকা সত্ত্বেও মিলার সিন্ডিকেটের কৌশলে দেশের চালের বাজারে বিরাট সংকট ও মূল্যবৃদ্ধির সৃষ্টি হয়েছে। বোরোর ভরা মৌসুমে কৃষকের ধান কিনে জিম্মি করেছে তারা। বাজারে চাহিদার তুলনায় কম সরবরাহ দেখিয়ে চালের দাম প্রতি বস্তায় (৫০ কেজি) সর্বোচ্চ ৩৫০ টাকা পর্যন্ত বাড়িয়েছে। ফলে খুচরা পর্যায়েও প্রতি কেজি চালের দাম ৫-৭ টাকা বেড়েছে, যা সাধারণ ভোক্তাদের জন্য কষ্টের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সরকারি মজুত পর্যাপ্ত
খাদ্য অধিদপ্তরের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, সরকারি গুদামে খাদ্যশস্যের মজুত আছে ১৭ লাখ ১০ হাজার টন, যার মধ্যে চাল রয়েছে ১৩ লাখ ১৫ হাজার টন।
তবুও মিলাররা কৃষকের কাছ থেকে আগেই ধান কিনে গুদামে রেখে দিয়েছেন বলে পাইকারি বাজারে চালের দাম উর্ধ্বমুখী।
বাজারের পরিস্থিতি
নওগাঁ ও দিনাজপুরের মিল পর্যায়ে মিলার সিন্ডিকেটের কারসাজিতে মিনিকেট চালের ৫০ কেজির দাম বেড়ে ৩৮০০ থেকে ৩৯০০ টাকা, নাজিরশাইল চালের ২৫ কেজির দাম ২০০০ থেকে ২১৫০ টাকা এবং বিআর২৮ জাতের চালের দাম ২৭০০ থেকে ২৯৫০ টাকায় পৌঁছেছে।
রাজধানীর কাওরান বাজারসহ খুচরা বাজারে প্রতি কেজি মিনিকেট চাল ৮৫-৮৭ টাকা, নাজিরশাইল ৯০ টাকা এবং বিআর২৮ চাল ৬৫ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে, যা ঈদের আগে থেকে ৫-৭ টাকা বেশি।
ভোক্তাদের অসন্তোষ
মালিবাগের বাজারে চাল কিনতে আসা ক্রেতারা জানান, বোরোর নতুন চাল বাজারে আসার পর দাম কমার আশা ছিল, কিন্তু দাম বেড়ে যাওয়ায় তাদের ক্রয়ের ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে। অনেক ক্রেতা বাজারে তদারকির অভাবের অভিযোগ করেন।
মিলারদের কৌশল
মিলাররা চালের দাম বাড়ানোর জন্য কৃষকের কাছ থেকে আগেই ধান কিনে গুদামে মজুত রাখছেন এবং সংকট তৈরি করছেন বলে সংশ্লিষ্টরা অভিযোগ করেন। এতে পাইকারি বাজার থেকে শুরু করে খুচরা বাজার পর্যন্ত দাম বাড়ছে।
কর্তৃপক্ষের প্রতিক্রিয়া
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ও খাদ্য অধিদপ্তর থেকে জানানো হয়েছে, দাম বৃদ্ধি ও অসাধু চক্রদের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। অবৈধ মূল্য বৃদ্ধি ধরা পড়লে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এমন পরিস্থিতিতে দ্রুত বাজারের স্বাভাবিকতা ফিরিয়ে আনতে মিলার সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কঠোর নজরদারি ও আইনানুগ পদক্ষেপ প্রয়োজন বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন।
