যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ শুল্ক আলোচনায় অচলাবস্থা, রপ্তানিতে শঙ্কা

বাংলাদেশি পণ্যের ওপর ৩৫ শতাংশ অতিরিক্ত শুল্ক কমাতে যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের প্রতিনিধিদলের মধ্যে তিন দিনের আলোচনা শেষ হয়েছে কোনো আশাব্যঞ্জক বার্তা ছাড়াই। গত ৯ জুলাই শুরু হওয়া এই বৈঠক শেষ হলেও সরকারের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত স্পষ্ট কোনো অবস্থান বা অগ্রগতির তথ্য জানানো হয়নি।
সূত্র বলছে, পুরো জুলাইজুড়ে আলোচনার প্রক্রিয়া চলতে পারে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের চাওয়া আর বাংলাদেশের সক্ষমতার মাঝে বিরাজ করছে বড় ধরনের ব্যবধান। ফলে শেষপর্যন্ত সমাধান আসবে কিনা, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা থেকেই যাচ্ছে।
চলতি বছরের এপ্রিলে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশি পণ্যের ওপর ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে। পরে তা ২ শতাংশ কমিয়ে ৩৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়। এর সঙ্গে আগের ১৫ শতাংশ শুল্ক যোগ হয়ে মোট শুল্ক দাঁড়ায় ৫০ শতাংশে। সবকিছু অপরিবর্তিত থাকলে আগস্ট থেকে এই শুল্কই কার্যকর হবে, যা দেশের রপ্তানি খাতের জন্য বড় ধরনের ধাক্কা হিসেবে দেখা হচ্ছে।
বাংলাদেশ গার্মেন্টস বায়িং অ্যাসোসিয়েশনের সহসভাপতি এ কে এম সাইফুর রহমান বলেন, “আগস্ট থেকে এই শুল্ক কার্যকর হলে রপ্তানিতে বড় ধরনের ধস নামবে। ইতিমধ্যেই এর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে—বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান ক্রয়াদেশ স্থগিত করেছে।”
বিজিএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বাবু জানান, “ইউএসটিআর থেকে প্রথম যে চিঠি এসেছিল, তা ছিল ইতিবাচক। কিন্তু দ্বিতীয় চিঠিটি প্রকাশ করা হয়নি। যদি ৩৫ শতাংশ শুল্কই চূড়ান্ত হয়, তাহলে তা আমাদের জন্য অত্যন্ত কঠিন হয়ে দাঁড়াবে।”
গত অর্থবছরে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি আগের বছরের তুলনায় বেড়েছে। দিন দিন মার্কিন বাজার বাংলাদেশের অন্যতম বড় গন্তব্যে পরিণত হচ্ছিল। তবে নতুন শুল্ক কাঠামোর অভিঘাতে সেই ধারা থমকে যেতে পারে বলেই আশঙ্কা করা হচ্ছে শিল্পমহলে।
শুল্ক ইস্যুতে দুই দেশের আলোচনায় বাংলাদেশের প্রস্তুতি কেমন ছিল এ নিয়ে অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেন, আলোচনা করতে যাওয়া দলে যে ধরণের বিশেষজ্ঞ থাকা দরকার ছিল তাদেরকে নেওয়া হয়নি। এমনকি যারা যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ব্যবসা করেন, ওই বাজার নিয়ে গবেষণা করেন তাদের থেকে কোনো পরামর্শ চাওয়া হয়নি।